বেদি তৈরির আগে বিশ্বরূপের মাকে শাড়ি দিলেন জওয়ানেরা। নিজস্ব চিত্র
বছর তিনেক আগে ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদীদের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে প্রাণ হারান পুরুলিয়ার আড়শার খুকড়ামুড়া গ্রামের ভারত তিব্বত সীমান্ত পুলিশের জওয়ান বিশ্বরূপ মাহাতো। বিশ্বরূপের স্মৃতি ধরে রাখতে এ বার খুকড়ামুড়ায় এসে শহিদ বেদি নির্মাণের কাজে হাত লাগালেন তাঁরা সহকর্মীরা।
২০১৪ সালে আড়শা থানার পুয়াড়া পঞ্চায়েতের খুকড়ামুড়ার যুবক ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশে যোগ দেন। ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। ছোটছেলে বিশ্বরূপের জন্য তাঁর সহকর্মীদের সোমবার গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে বেদি তৈরি করতে দেখে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি বাবা ভীমচন্দ্র মাহাতো ও মা ভাগ্য মাহাতো। তাঁদের সান্ত্বনা দিয়ে জওয়ানেরা বলেন, ‘‘আপনাদের ছেলে নেই তো কী হয়েছে, আমরা আছি। আপনাদের ছেলে দেশমাতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন।’’
জওয়ানদের পক্ষে নগেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘এই স্কুল থেকেই বিশ্বরূপের লেখাপড়ার সূচনা। গ্রামের সমস্ত শিশুর মনে যাতে দেশভক্তি তথা দেশসেবার জন্য উৎসাহ গড়ে ওঠে, সে জন্য এখানেই বিশ্বরূপের বেদি তৈরি করা হচ্ছে।’’ জওয়ানদের নিয়ে গ্রামে উপস্থিত হন ৪০বি ব্যাটেলিয়নের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডান্ট শ্রী অভিলাক্ষ। তাঁরা বিশ্বরূপের মায়ের হাতে শাড়ি তুলে দেন।
জওয়ানেরা বিশ্বরূপের বাড়িতে উঠেছেন। বিশ্বরূপ মাহাতোর বড় দাদা আশিস মাহাতো বলেন, ‘‘ভাই হারানোর যন্ত্রণা যেমন রয়েছে, তেমনই দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে বলে সেটাও গর্বের।’’ গ্রামবাসী ভবতোষ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিশ্বরূপ তাঁদের গ্রামের গর্ব হয়ে থাকবেন। বাসিন্দারা জানান, এ দিন কাজ শেষ হয়নি। আজ, মঙ্গলবার বাকি কাজ শেষ করবেন জওয়ানেরা। এ ভাবেই ঘরের ছেলের স্মৃতিকে ধরা রাখতে চান গ্রামবাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy