ক’দিনে: যে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে, সে ছিল এসএনসিইউ ইউনিটে।ছবিটি সেই বাড়ির এক তলার। পানীয় জল নেওয়ার জায়গার এই হাল ছিল ২২ সেপ্টেম্বরের, যে দিন জেলাশাসক হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিলেন।ছবি: শুভ্র মিত্র
আবার বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। আবার শিশু মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ উঠল।
বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালে নবজাত এক কন্যাসন্তানের মৃত্যু হয়। শিশুটির বাবা সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘‘২২ সেপ্টেম্বর জেলাশাসক হাসপাতালে এসেছিলেন। তার দু’দিন আগে এই হাসপাতালেই আমাদের জমজ সন্তান হয়েছে। সে দিন নিজের চোখে দেখেছি, জেলাশাসক ঘুরে ঘুরে সব দেখছেন। তার পরেও এমনটা হল।’’ শিশুটির মা মালা বিশ্বাস বলেন, ‘‘সংক্রমণের আশঙ্কায় যেখানে বাচ্চার সঙ্গে মাকেও থাকতে দেওয়া হয় না, সেখানে চিকিৎসক ও নার্সদের উপরেই সবাই ভরসা করেন। সেই ভরসা ওরা রাখতে পারছেন না।’’
কী ঘটেছিল?
বিষ্ণুপুরের দেঝাট গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় সিআরপি জওয়ান সুমন জানান, ২০ সেপ্টম্বর বিকেল ৪টে নাগাদ মালাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সে দিন বিকেল ৫টা ১০ মিনিট এবং ৬টা ২০ মিনিটে তাঁদের দু’টি জমজ কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। ওজন কম থাকায় দুই সদ্যোজাতকে রাখা হয়েছিল এসএনসিইউ ইউনিটে।
মালার দাবি, বুধবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ওই ইউনিটে গিয়ে শিশু দু’টিকে স্তন্যপান করান। তিনি বলেন, ‘‘তখন দু’জনেই দিব্যি সুস্থ, হাসিখুশি ছিল। ১০টার সময়ে হঠাৎ আমাকে দিয়ে জোর করিয়ে লিখিয়ে নেওয়া হয় বাচ্চা অসুস্থ।’’ দম্পতির দাবি, রাত ১টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে তাঁদের জানানো হয়, শ্বাসনালীতে দুধ আটকে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ছবিটি বৃহস্পতিবারের। ছবি: শুভ্র মিত্র
সুমনের অভিযোগ, কর্তব্যরত নার্সদের গাফিলতির জন্যই তাঁদের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।’’ বিষ্ণুপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা।
জেলাশাসক হাসাপাতাল থেকে ঘুরে যাওয়ার পরে প্রায় এক সপ্তাহ কাটতে চলল। তিনি বলে গিয়েছিলেন, ‘‘এ ভাবে চলতে পারে না।’’ এই ক’দিনে ছবিটা কতটা বদলেছে?
যেখানে নবজাতক শিশুটি ভর্তি ছিল, সেই এসএনসিইউ ইউনিটে যাওয়ার পথে বিশেষ বদল চোখে পড়ল না। বাড়িটির একতলায় ঢুকেই পানীয় জলের কল। বেসিনে, মেঝেতে আবর্জনা সে দিনও ছিল। এ দিনও ছিল। হাসপাতালে আবর্জনা ছড়িয়ে থাকার জন্য সেদিন জেলাশাসক সুপার এবং চার অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ দিনও পথের পাশে ছড়িয়ে ছিল নোংরা। ব্লাড ব্যাঙ্কে গিয়ে কর্মীদের দেখা পাননি জেলাশাসক। কার কখন ডিউটি, সেই খতিয়ান লেখা রোস্টারে কিছু অসঙ্গতিও চোখে পড়ে তাঁর।
আর এ দিন? সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তড়িতকান্তি পালের কাছে যাওয়া হয়েছিল বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতে। তিনি বলেন, ‘‘নার্স ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ পেয়েছি। ২০টি বেডের জন্য ৫ জন চিকিৎসক আর ১২ জন নার্স রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে দেখছি, তখন কারা ডিউটিতে ছিলেন।’’ খোঁজ শুরু হয়। এক ঘণ্টা কেটে যায়। রোস্টার আর মেলে না। হাসপাতাল সূত্রে পাওয়া খবরে, সন্ধ্যা পর্যন্ত সেটির খোঁজ পাওয়া যায়নি।
জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ দিনের ঘটনার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেব। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গড়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy