বাঁকুড়ায় পসরা (বাঁ দিকে), মানবাজারে বাজেয়াপ্ত নিষিদ্ধ বাজি (ডান দিকে)। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
‘পরিবেশবান্ধব’ বাজির আড়ালে নিষিদ্ধ বাজিও বিক্রি হয় কি না, তৈরি হচ্ছিল সে আশঙ্কা। বুধবার পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার হয়েছে বলে জানাল পুলিশ। গত কয়েক দিনের ছবিটা পাল্টে এ দিন দুই জেলার সদর শহরেই বাজি বিক্রির পসরা দেখা যায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, তাঁরা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, পরিবেশবান্ধব বাজিই বিক্রি করছেন। যদিও পুলিশ সূত্রের দাবি, কেউ-কেউ পরিবেশবান্ধব বাজির আড়ালে নিষিদ্ধ বাজিও বিক্রি করছেন। পুরুলিয়ার নানা এলাকা থেকে পুলিশ ১৩ জনকে গ্রেফতারও করেছে।
এ দিন পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া, দুই শহরেই বাজি বিক্রি হতে দেখা যায়। পুরুলিয়ার চকবাজারের বিক্রেতা দীপক দত্ত, কানাই রক্ষিতেরা বলেন, ‘‘সবুজ বাজির প্যাকেটে ‘কিউআর কোড’ থাকছে। তা স্ক্যান করলেই বাজির বিশদ তথ্য জানা যাবে। এই বাজিই বিক্রি করছি।’’ ব্যবসায়ীদের অনেকে দাবি করেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বাজি বিক্রি করছেন তাঁরা। কিন্তু পুলিশি হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে।
পুলিশের অবশ্য দাবি, অভিযান চালিয়ে দেখা গিয়েছে, অনেকে সবুজ বাজির আড়ালে নিষিদ্ধ বাজিও বিক্রি করছেন। মঙ্গলবার রাতে পুরুলিয়া শহরে তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় নিতুড়িয়ার সড়বড়ি মোড়ে নিষিদ্ধ বাজি বিক্রির অভিযোগে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে। প্রায় ১১ কেজি বাজি উদ্ধার হয়। আদ্রার পলাশকোলা এলাকা থেকে দু’জনকে, কাশীপুরের তালাজুড়ি থেকে এক জনকে গ্রেফতার ও বেশ কিছু নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করা হয়।
মানবাজার মহকুমায় এসডিপিও বরুণ বৈদ্যের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। মানবাজারে তিন জন, বরাবাজার ও কেন্দায় দু’জন করে এবং পুঞ্চা ও বান্দোয়ানে এক জন করে বিক্রেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোটশিলা ও জয়পুরেও তিন বিক্রেতাকে গ্রেফতার করা হয়। বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শহরে অভিযানে বেশ কিছু নিষিদ্ধ বাজি মিলেছে।
সবুজ বাজির দাম বেশির কারণে বিক্রি কম বলে দাবি করেছেন কিছু বিক্রেতা। পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘‘বাড়ির ছোটদের আবদারে বাজি কিনতে বেরোতে হয়েছে। অনেক খুঁজে সবুজ বাজি পেয়েছি।’’ কাশীপুরের প্রকাশ সাহার কথায়, ‘‘সবুজ বাজির দাম কিছুটা বেশি। ছোটদের চাহিদা মেটাতে কিনতেই হচ্ছে।’’ একই কথা বলেন পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা অশোকানন্দ সিংহ, শুভশ্রী দাসগুপ্তেরা। বাঁকুড়ার বাসিন্দা নিরুপম দত্ত ছেলেকে নিয়ে বাজি কিনতে বেরিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “বাজির ধোঁয়ায় পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। তবে দীপাবলিতে ছোটরা বাজির ঝোঁক ধরছে। খরচ একটু বেশি হলেও, পরিবেশবান্ধব বাজিই কিনছি।’’
দুই জেলারই অনেক এলাকায় অবশ্য বাজি বিক্রি এ বার বিশেষ দেখা যায়নি বলে বাসিন্দাদের অনেকের দাবি। ঝালদার বিক্রেতা রীতেশ আগরওয়াল বলেন, ‘‘বাজি আসে বাইরে থাকে। আগে থেকে বরাত দিতে হয়। কিন্তু এ বার নানা নির্দেশের জেরে আমরা বুঝতে পারিনি, শেষমেশ বাজি বিক্রির ছাড়পত্র মিলবে কি না। তাই বরাতই দিইনি।’’ রঘুনাথপুর নতুন বাজারের কয়েকজন বিক্রেতাও এক কথা বলেন। পাত্রসায়রের বাসিন্দা অর্ক মুখোপাধ্যায় বলেন, “পরিবেশবান্ধব বাজি কেনার ইচ্ছে আছে। কিন্তু এলাকার বাজারে কোনও বাজির দোকান খোলেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy