মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। — ফাইল চিত্র।
আগামী দিনে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া জেলায় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে ৬০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনার কথা শোনালেন রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি এবং বস্ত্র দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ।
শুক্রবার পুরুলিয়া রবীন্দ্র ভবনে দুই জেলাকে নিয়ে আয়োজিত ‘সিনার্জি’-তে মন্ত্রী বলেন, ‘‘দু’-তিন বছরে এই দুই জেলায় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রে মোট ৬৪৪ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই বিনিয়োগ সম্পূর্ণ হলে প্রায় ৬,৫০০ জনের কর্মসংস্থান হবে। পরোক্ষ ভাবে আরও অনেকের কাজের ব্যবস্থা হবে।’’
শিল্পায়নের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার রঘুনাথপুরে ‘জঙ্গলসুন্দরী’ প্রকল্পের কথা ঘোষনা করেছে। সেখানে ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্র ছাড়াও ভারী শিল্পে আরও কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন মন্ত্রী। চলতি অর্থ-বর্ষে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া জেলায় শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রধান প্রধান কয়েকটি বিধিবদ্ধ ছাড়পত্রের ১,৬৮৫টির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।
বিনিয়োগকারীদের সহায়তার জন্য তাঁর দফতর হেল্পডেস্কের সংখ্যা বাড়িয়েছে বলে জানান প্রধান সচিব রাজেশ পান্ডে। তিনি বলেন, ‘‘জমির মিউটেশন, দমকলের লাইসেন্স-করানো-সহ নানা বিষয়ে তথ্য হেল্পডেস্ক থেকে জানা যাবে। প্রতিটি জেলায় হেল্পডেস্ক করছি আমরা।’’ তিনি জানান, দূষণ, জমি, পুর্ননবীকরণ-সহ নানা প্রয়োজনীয় বিষয়ে বিনিয়োগকারীরা কী ধরনের সহায়তা পাবেন তা জানানোর জন্য রাজ্য সরকার একটি পোর্টাল চালু করেছে ১ জানুয়ারি।
পুরুলিয়া জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রবীরকুমার রায় বলেন, ‘‘পুরুলিয়া-বাঁকুড়া সহ কয়েকটি জেলাকে নিয়ে শেষ সিনার্জি হয়েছিল দুর্গাপুরে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। সেখানে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রে জেলায় ৩৪টি ইউনিটের জন্য ১৫,৬২১.৩৪ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছিল। যার মধ্যে ১৫টি ইউনিটের কাজ শেষ, তিনটি ইউনিট গড়ার কাজ চলছে। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ৭০ শতাংশ বিনিয়োগ এসেছে। কর্মসংস্থান হবে ১,৫০০ হাজার মানুষের।’’ তবে দফতর সূত্রে খবর, কয়েকটি শিল্প গোষ্ঠী বিনিয়োগের প্রস্তাব দিলেও পরে তাঁরা আর আগ্রহ দেখাননি।
প্রবীর জানান, বৃহৎ ও ভারী শিল্পে শ্রী সিমেন্ট ও শাকম্ভরী গ্রুপের দু’টি ইউনিটের কাজ চলছে। দুই ইউনিটে চার হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ হবে। রঘুনাথপুরে জঙ্গলসুন্দরী প্রকল্পে শ্যাম স্টিল ৬০০ একর জমি পেয়েছে। তারা ১,৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। এ ছাড়া জঙ্গলসুন্দরীতে অন্য একটি স্টিল কোম্পানি ৯,১২৩.৩৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে।
যেহেতু রাজ্যে পর্যটনে নতুন গন্তব্য পুরুলিয়া। তাই ওই শিল্পে জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই উদ্যোগপতিদের কাছে বিনিয়োগের আবেদন জানান। প্রবীর বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই আকাশ গ্রুপ এই শিল্পে ৯০ কোটি এবং অন্যান্য হোটেল গ্রুপ ২০০ কোটি বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।’’
জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরুলিয়াতে শিল্প গড়ুন। এখানে জমি রয়েছে, দক্ষ শ্রমিকেরও অভাব নেই।’’ প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘দুই জেলার যা শিল্প সম্ভাবনা রয়েছে, আপনারা তার সদ্ব্যবহার করুন।’’
শিল্প সম্মেলনে পুরুলিয়া জেলার জন্য ‘শিল্প সমাধান’ নামে একটি পোর্টালের সূচনা হয়।
উপস্থিত ছিলেন দুই মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু ও জ্যোৎস্না মান্ডি, বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো, জেলা পরিষদের মেন্টর অঘোর হেমব্রম, কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভিন্ন দফতরের কর্মাধ্যক্ষেরা। ছিলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রজত নন্দা, অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) রাজেশ রাঠোর, পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলাশাসক রোহন লক্ষ্মীকান্ত জোশী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy