বীরভূমের বগটুই গ্রামে ঘরে আগুন লাগিয়ে ১০ জনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় রিপোর্ট পেশের সঙ্গে সঙ্গে দু’জন নাবালক অভিযুক্তের জামিন বাতিল করার জন্য কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন জানাল সিবিআই। সোমবার এই মামলায় তদন্তকারী সংস্থার হয়ে কেন্দ্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট জমা দেন। তখনই তিনি জানান, এই মামলায় অভিযুক্ত দুই নাবালককে হোমে না-পাঠিয়ে জামিন দিয়েছে সিউড়ির জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড। জামিন দেওয়ার আগে কেস ডায়েরি দেখা হয়নি। ওই দু’জনের এক জনের নাম নির্যাতিতার মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতেও রয়েছে।

রামপুরহাটের বগটুইয়ে ২১ মার্চ পরপর কিছু বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে আগেই ন’জনের মৃত্যু হয়। প্রায় দেড় মাস হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে অগ্নিদগ্ধ আরও এক মহিলা রবিবার মারা যান। হাই কোর্টের নির্দেশে ওই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। পরবর্তী কালে রামপুরহাটের ঘটনায় জনস্বার্থ মামলাকারী প্রীতি করের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর আবেদনের ভিত্তিতে রামপুরহাটে তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখকে খুনের ঘটনারও তদন্তভার সিবিআই-কে দেয় হাই কোর্ট। কারণ, ভাদু খুনের বদলা নিতেই ওই ১০ জনকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। অর্থাৎ দু’টি ঘটনা পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত।

বগটুই কাণ্ডে যে-দুই নাবালকের কথা উঠেছে, তাদের বয়স নিয়ে প্রশ্ন আছে তদন্তকারীদের। তা ছাড়া নাবালক হলেও অপরাধের গুরুত্ব বুঝে তাদের হোমে পাঠানো উচিত ছিল বলে মনে করছেন অনেক আইনজীবী। কার্যত এই সব যুক্তি এ দিন আদালতে সিবিআইয়ের কৌঁসুলির গলাতেও শোনা গিয়েছে। এর পাশাপাশি বিচার প্রক্রিয়া বীরভূম থেকে সরানোর আবেদনও এ দিন জানান মামলাকারী প্রীতি করের কৌঁসুলি কৌস্তভবাবু।

উচ্চ আদালতের খবর, দুই নাবালকের জামিন সংক্রান্ত নির্দেশের প্রতিলিপি-সহ সিবিআইয়ের বক্তব্য হলফনামার আকারে জমা দিতে বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। কৌস্তভবাবু জানান, ফের শুনানি হবে ১০ মে।