কাঠ মিস্ত্রী নুরুল এর মেয়ের বিয়েতে উপহার টোটো বৃদ্ধাশ্রম এর কর্নধার ছবিলা খাতুন। সিউড়িতে রবিবার।
কারও প্রয়োজনে তাঁর পাশে থাকলে, তার কয়েকগুণ ফিরে পাওয়া যায় আশীর্বাদ হিসেবে। এই কথাগুলি ভীষণ ভাবে মিলে গেল শালবনি গ্রামের নুর আলম মিয়ার জীবনে।
বৃদ্ধাশ্রমের প্রয়োজনে নির্দ্বিধায় নিজের মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো টাকা খরচ করে নতুন টোটো কেনার ব্যবস্থা করেছিলেন কাঠমিস্ত্রি নুর আলম মিয়া। এবার সেই মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে আশ্রমের পক্ষ থেকে একটি নতুন টোটো কিনে উপহার দেওয়া হল নব দম্পতিকে। সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের শালবনি গ্রামের বৃদ্ধাশ্রমের কর্ণধার ছবিলা খাতুনের এই উদ্যোগে আপ্লুত নুর আলম।
নিজের তৈরি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বা কোনও কাজে আশ্রম থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে টোটো কেনার পরিকল্পনা করছিলেন আশ্রমের কর্ণধার তথা জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের এএসআই ছবিলা খাতুন। কিন্তু আর্থিক অসুবিধার কারণে তা হয়ে উঠছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের প্রথম দিনেই কেনা হয় টোটো। এই টোটো কেনার জন্য সম্পূর্ণ আর্থিক সহযোগিতা করেন বৃদ্ধাশ্রমের কাঠমিস্ত্রি নুর আলম মিয়া। নিজের মেয়ের বিয়ের জন্য তিলে তিলে জমিয়ে রাখা এক লক্ষ টাকার পুরোটাই সেই টোটো কেনার জন্য ছবিলার হাতে তুলে দেন তিনি। তাঁর দাবি ছিল, “ভাল কাজের জন্য টাকা দিয়েছি। আশ্রমের মায়েদের আশীর্বাদে নিশ্চয় আমার মেয়ের বিয়েও সুন্দর ভাবে উতরে যাবে।”
আশীর্বাদ অবশ্য নুর আলমের মেয়ে পেয়েছেন। রবিবার মেয়েটির বিয়ে উপলক্ষে একটি নতুন টোটো কিনে তাঁকে ফুল দিয়ে সাজিয়ে তুলে দেওয়া হল নুরের হাতে। মেয়ের বিয়ের জমানো টাকা আশ্রমকে দিয়ে দেওয়ায় কিছুটা অসুবিধায় পড়েছিলেন নুর। কিন্তু এই উপহারে অনেকটাই সুবিধা হল বলে জানান তিনি।
ছবিলা জানান, বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের জন্য যখন টোটোর প্রয়োজন ছিল, তখন পরিচিত অনেকের কাছেই আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কাউকে পাশে পাননি। নতুন টোটো কেনার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তখনই নুর নিজের কষ্টের এক লক্ষ টাকা তাঁর হাতে তুলে দেন। ছবিলা বলেন, “আমাদের প্রয়োজনের সময় কোনও কথা না ভেবে তিনি পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন ওঁর প্রয়োজনে আমরা পাশে গিয়ে না দাঁড়ালে অমানবিকতা হত।” নুর আলম বলেন, “আমার কৃতজ্ঞতা জানানোর কোনও ভাষা নেই। দিদি আমার জন্য যা করেছেন, যে ভাবে বিয়ের পুরো কাজে তিনি পাশে দাঁড়ালেন, তেমন নিজের লোকও হয় তো পারতেন না।।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy