Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

অস্ত্রের কোপে কাশীপুরে নিহত ব্যবসায়ী

ঝুপড়ি হোটেলের অদূরে মিলল মালিকের রক্তাক্ত দেহ। মঙ্গলবার ভোরে পুরুলিয়ার কাশীপুরের ঘটনা।কাশীপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মনসারাম লোহার (৪৫)। বাড়ি কাশীপুরের লোহারপাড়া এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাশীপুর শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ০০:৫১
Share: Save:

ঝুপড়ি হোটেলের অদূরে মিলল মালিকের রক্তাক্ত দেহ। মঙ্গলবার ভোরে পুরুলিয়ার কাশীপুরের ঘটনা।

কাশীপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম মনসারাম লোহার (৪৫)। বাড়ি কাশীপুরের লোহারপাড়া এলাকায়। এ দিন কাশীপুর জেকেএম গার্লস হাইস্কুল ও পাশের গ্রান্থাগারের মাঝে একটি গলি থেকে মনসারামের দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানাচ্ছে, ঘটনাটি খুনের। ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে, পেটে কোপ মেরে খুন করা হয়েছে মনসারামকে। তবে কারা খুন করেছে বা খুনের কারণ কী— তা নিয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে পুলিশ। মৃতের পরিজনেরাও এই ব্যাপারে বিশেষ কোনও সূত্র দিতে পারছেন না।

কাশীপুরের হাটতলা থেকে রাজবাড়ি মোড় যাওয়ার রাস্তার ধারে, গার্লস হাইস্কুলের পাশে ছোট হোটেল চালাতেন মনসারাম। সকালে চা, তেলেভাজা, দুপুরে ভাত, রাতে রুটি বিক্রি করেতন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময়ে ব্যবসা ভালই চলতো। সম্প্রতি কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতি ওই এলাকায় দোকান তৈরির কাজ শুরু করেছে। ফলে ওই হোটেল-সহ অন্য দোকান ভাঙা হয়েছে। তার পরে ঝুপড়ি দোকান করে ব্যবসা চালাচ্ছিলেন।

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন মনসারাম। তাঁর স্ত্রী সরলাদেবী বলেন, ‘‘রাতে খাওয়ার পরে বলেছিলেন খুব গরম লাগছে। তাই বাইরে যাচ্ছেন। রাতে আর বাড়ি ফেরেননি।’’ তাঁর দাবি, মাঝেমধ্যেই মনসারাম রাতে হোটেলে থেকে যেতেন বলে তিনি তখন দুঃশ্চিন্তা করেননি। এ দিন ভোরে স্থানীয় বাসিন্দারা মনসারামের রক্তাক্ত দেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ জানিয়েছে, গলির মধ্যে পড়েছিল ওই ব্যক্তির দেহ। গলার অনেকটা অংশ কাটা। পেটে ধারালো অস্ত্রের কোপ মারার চিহ্ন।

কে বার কারা, কেন খুন করল মনসারামকে, তা নিয়ে এখনও পুরোপুরি অন্ধকারে পুলিশ। মৃতের ছেলে সূর্য বলেন, ‘‘বাবার সঙ্গে কারও কোনও বিবাদ রয়েছে বলে শুনিনি।” তবে রীতিমতো পরিকল্পনা করেই মনসারামকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছেন এক পুলিশ কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, প্রথমে পেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মারা হয়েছিল। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা কাটা হয়েছে। এই ভাবে খুন সচারাচর হটাৎ করে কোনও বিবাদের জেরে হয় না।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝুপড়ি হোটেলের আড়ালে বেশ কয়েক বার অবৈধ ভাবে মদ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছিল মনসারামের বিরুদ্ধে। কয়েক মাস আগে স্থানীয় মহিলারা কাশীপুরে অবৈধ মদ বিক্রি বন্ধ করার দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন। সেই সময়ে তাঁরা মনসারামের ওই হোটেলটির বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে মদ বিক্রির অভিযোগ তুলেছিলেন।

তবে খুনের ঘটনার সঙ্গে মদ বিক্রির অভিযোগের কোনও যোগাযোগ প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া যায়নি বলেই পুলিশ সূত্রের দাবি।

গার্লস স্কুলের পাশে খুনের ঘটনা ঘটায় এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘কাশীপুরে সদরে সাপ্তাহিক হাটে রাতে কিছু অসামাজিক কাজকর্ম হচ্ছে বলে খবর পেয়েছি। তারপরে এই খুনের ঘটনা ঘটল। পুলিশের খুবই গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ তদন্ত করার দরকার।’’ পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের পরিবার অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Stabbed Death Business Man
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE