নিতুড়িয়ার জোড়বেড়িয়া গ্রামে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার। নিজস্ব চিত্র
নিতুড়িয়ায় পাঞ্চেত জলাধারের উপরে সেতু তৈরিতে রাজ্যের বিরুদ্ধে সদিচ্ছার অভাবের অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা সাংসদ সুভাষ সরকার। সোমবার নিতুড়িয়ার রায়বাঁধ এলাকায় দলীয় কর্মসূচিতে এসে তিনি এই অভিযোগ তোলেন। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, রাজ্য সব সময়েই চায় ওই সেতু তৈরি করা হোক। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কোনও পদক্ষেপ করছে না। নিজেদের দোষ এড়াতে রাজ্যের ঘাড়ে দায় চাপাচ্ছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা নিতুড়িয়া ব্লকের দুই পঞ্চায়েত রায়বাঁধ ও গুনিয়াড়া থেকে ব্লক সদর গোবাগ, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হারমাড্ডি থেকে পঞ্চকোট কলেজ ও রঘুনাথপুর পলিটেকনিক কলেজে পড়াশোনা করতে যাওয়ার একমাত্র উপায় নৌকায় জলাধার পেরিয়ে যাওয়া। ঘুরপথে যেতে হলে অন্তত ৩০ কিলোমিটার পার হতে হয়।
তাই বাথানবাড়ি থেকে মহেশনদী পর্যন্ত পাঞ্চেত জলাধারের উপরে সেতু তৈরির দাবিতে কমিটি গড়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করছেন দুই পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। লোকসভা নির্বাচনের আগে এলাকায় প্রচারে যাওয়া সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের কাছেই কমিটি সেই দাবি জানান। সে সময় বিজেপির প্রার্থী সুভাষও আশ্বাস দিয়েছিলেন, সাংসদ হলে তিনি সেতু তৈরিতে উদ্যোগী হবেন। বিরোধীদের অভিযোগ কেন্দ্রে মন্ত্রী হলেও সুভাষ নিজের প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়েছেন।
এ দিন রায়বাঁধে সুভাষ গেলে সেতু তৈরির প্রসঙ্গ ওঠে। সুভাষ বলেন, ‘‘এখনও বলছি, রাজ্য সরকার সেতুর বিষয়ে কেন্দ্রকে লিখলেই এক বছরের মধ্যে কেন্দ্রের কাছ থেকে সেতু তৈরির জন্য অনুমোদন এনে দেব।” তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজ্য সরকারকে সেতু তৈরিতে জমির ব্যবস্থা করে দিতে হবে। আসলে এখানে সেতু তৈরির ব্যাপারে রাজ্যের কোনও সদিচ্ছাই নেই। কোনও ক্ষেত্রেই তারা কেন্দ্রকে সহযোগিতা করে না।”
তবে তৃণমূলের নিতুড়িয়ার ব্লক সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শান্তিভূষণপ্রসাদ যাদবের দাবি, ‘‘প্রস্তাবিত সেতু কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ডিভিসি-র পাঞ্চেত জলাধারের উপরে করার কথা। মন্ত্রী চাইলেই ডিভিসিকে বলে জমির ব্যবস্থা করতে পারেন। আসলে বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দ্যেশেই কখনও এই রাজ্যের উন্নয়ন চায় না। ওদের নেতা-মন্ত্রীরা উন্নয়নের প্রশ্নে রাজ্যের উপরে দায়ভার চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যান।”
বিজেপির স্থানীয় নেতা সুভাষ মণ্ডলের দাবি, ‘‘মন্ত্রী বলতে চেয়েছেন, রাজ্য সরকার ডিভিসি-র সঙ্গে আলোচনা করে জমির ব্যবস্থা করে সেতু তৈরির বিষয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখুক। এক বছরের মধ্যে সেতু তৈরির অনুমোদন এনে দেবেন মন্ত্রী।”
সিপিএম নেতা সোমনাথ মিশ্র বলেন, ‘‘সেতু তৈরি হবে ডিভিসির জলাধারের উপরে। বিজেপি চাইলেই সহজে সেতু তৈরির ব্যবস্থা করতে পারে। কিন্তু ওদের মন্ত্রী রাজ্যের ওপরে দায় চাপাচ্ছে। এ দিকে রাজ্য সরকারও সেতু তৈরির নিয়ে কেন্দ্রকে প্রস্তাব পাঠাচ্ছে না। দু’দলেরই সদিচ্ছা নেই। আমরা দলগত ভাবে আন্দোলন শুরু করেছি।” বাথানবাড়ির বাসিন্দা নারদ শান্তিকারি, ভুরকুণ্ডাবাড়ির মহম্মদ আফজলরা বলেন, ‘‘যাতায়াতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে। অথচ নেতাদের কাছে শুধু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি।আমরা হতাশ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy