মনিরুল ইসলাম। ছবি: পিটিআই।
অন্য দল থেকে আসা নেতা-কর্মীদের নিয়ে নিজেদের দলে ক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু, সেই ক্ষোভ আলোচনার মাধ্যমে মেটানো সম্ভব বলেই
মনে করেন বিজেপির রাজ্য সহ-সম্পাদক বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী। তাঁর বক্তব্য, যে কেউ দলে স্বাগত। তবে যিনি বিজেপিতে আসছেন, তাঁকে দলের মতাদর্শ ও অনুশাসন মেনে চলতে হবে।
লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলামের বিজেপি-তে যোগদান নিয়ে তাঁর নাম না করেও এ ভাবেই দলের অবস্থান স্পষ্ট করলেন বিশ্বপ্রিয়বাবু। মনিরুল বিজেপি-তে যোগ দেওয়া ইস্তক দলের অন্দরে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। জেলা বিজেপি-র একাধিক নেতা প্রকাশ্যেই মনিরুলের দলে অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করেছেন। মনিরুল নিজেও গত মাসে দিল্লি গিয়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর থেকে জেলায় ফেরেননি। যদিও এর পিছনে নিজের অসুস্থতাই কারণই বলে দাবি লাভপুরের বিধায়কের।
লোকসভা নির্বাচন-উত্তর পর্যালোচনা বৈঠকে বৃহস্পতিবার সিউড়ির রামকৃষ্ণ সভাগৃহে এসেছিলেন বিজেপি-র ওই রাজ্য নেতা। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হতেই মনিরুল নিয়ে দলের জেলা নেতা-কর্মীদের একাংশের ‘আপত্তি’ নিয়ে প্রশ্ন করতেই বিশ্বপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘বিজেপি একটি বড় সংগঠন। দল আরও বাড়ছে। এটা তো স্বাভাবিক যে, কুমোরটুলি থেকে নতুন লোক আসবে না! বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকেই লোক আসবে। এবং ভারতীয় জনতা পার্টির প্রত্যেককে গ্রহণ করার মানসিকতা আছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই অন্তর্ভুক্তি নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকতেই পারে। আমরা কর্মীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করব।’’ রাজ্য নেতৃত্বের বার্তা পেয়ে সুর বদলেছেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়। বুধবার তিনি বলেছিলেন, ‘‘মনিরুলকে দলে ঢোকানো নিয়ে কর্মীদের ক্ষোভের কথা রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। বৈঠকে সেই বিষয়েও আলোচনা করা হবে।’’ এ দিন বৈঠক শেষে তিনিই বলেছেন, ‘‘মনিরুল নিয়ে একটা ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছিল ঠিকই। রাজ্য নেতৃত্ব আমাদের বুঝিয়েছেন। আমরা বুঝেছি।’’
তবে দলে অন্তর্ভুক্তি হলেই কাউকে মাথায় তোলা হবে না বা সংগঠনের নেতা বানিয়ে দেওয়া হবে না, সেটাও স্পষ্ট করেছেন বিশ্বপ্রিয়বাবু। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের স্পষ্ট কথা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁদের নেব। তাঁদের পিউরিফিকেশন বা বিশুদ্ধিকরণ করাব। আমাদের দলের যে বিচারধারা ও চিন্তাধারা, সেই ধারায় পরিস্রুত করেই তাঁকে কাজে লাগানো হবে।’’ তিনি জানান, ভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে অনেক বড় নেতা বিজেপিতে এসেছেন, কিন্তু বড় পদ পাননি। এখন আরও অনেকে আসবেন। দিন কয়েক আগেই বিজেপি-র জেলা নেতৃত্বের মধ্যে অন্য রাজনৈতিক দল ছেড়ে, বিশেষ করে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রশ্নে একটি সমন্বয় বৈঠক হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, বুথ স্তরে যোগ দিলে মণ্ডল এবং ব্লক স্তরের নেতারা জানবেন। মণ্ডল স্তরে কেউ যোগ দিলে জেলা স্তরকে জানাতে হবে। আবার জেলা স্তরে কেউ যোগ দিলে তা জানাতে হবে রাজ্যকে। কে কোন দল থেকে যোগ দিচ্ছেন, তিনি কোন স্তরের নেতা বা কর্মী, তাঁর ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’ কী— এ সব জানা জরুরি বলেও ঠিক হয় ওই বৈঠকে। বলা হয়, যোগদানে ইচ্ছুক নেতা সম্পর্কে বিজেপি-র জেলা নেতারা মণ্ডল নেতৃত্ব এবং মণ্ডল নেতারা বুথ স্তরের নেতা-কর্মীদের কাছে খবরাখবর নেবেন।
একই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এ দিন সিউড়ির রামকৃষ্ণ সভাগৃহেও। এই পর্যালোচনা বৈঠকে বীরভূম ও বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন বুথে সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণ ও চুলচেরা আলোচনা হয়েছে। মেপে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে শক্তি বা দুর্বলতা। তার সঙ্গে দলবদলে বিজেপিতে যোগদান প্রশ্নেও বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, সংগঠনের নানা ফাঁকফোকর, ত্রুটিবিচ্যুতি দূর করতে কী করণীয়, সে ব্যাপারে জেলার ৪০টি মণ্ডল এবং জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর ২১ জন সদস্যের প্রত্যেকের কাছ থেকে পরামর্শ, অনুযোগ বা অভিযোগ সংবলিত চিঠি নিয়ে গিয়েছেন রাজ্য নেতা। সংগঠন মজবুত করতে হলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে চিঠিগুলি খতিয়ে দেখে স্থির হবে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy