Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

দিলীপের অপসারণ চেয়ে পথে মিছিল পুরুলিয়ায়

আর বৃহস্পতিবার তাঁরই অপসারণ চেয়ে বিজেপির পতাকা হাতে পুরুলিয়া শহরের রাস্তায় নামলেন কিছু লোকজন। হাতে প্ল্যাকার্ড।

পোস্টার নিয়ে। নিজস্ব চিত্র

পোস্টার নিয়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
  পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:২০
Share: Save:

আজ, শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের জেলায় আসার কথা। আর বৃহস্পতিবার তাঁরই অপসারণ চেয়ে বিজেপির পতাকা হাতে পুরুলিয়া শহরের রাস্তায় নামলেন কিছু লোকজন। হাতে প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা— ‘পুরুলিয়া বিজেপি বাঁচাও’। স্লোগান উঠল দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর অপসারণ চেয়ে। দলের একটি সূত্র দাবি করছে, পথে নামা লোকজন বিজেপিরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন মোড় থেকে পোস্ট অফিস মোড় পর্যন্ত একটি মিছিল হয়। সেখানেই এই সমস্ত হয়েছে। তবে পুরুলিয়ায় এমনটা প্রথম নয়। এর আগেও প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিকাশ মাহাতোর অপসারণ চেয়ে দলেরই পতাকা হাতে মিছিল বেরিয়েছিল। তাঁর বিরদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে পোস্টারও পড়েছে খাস বিজেপির জেলা অফিসের দেওয়ালে। জেলা অফিসের ভিতরে বৈঠক চলাকালীন নেতাদের অপদস্থ করার নজিরও রয়েছে।

গত অক্টোবরে রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে পুরুলিয়া শহরের একটি ধর্মশালায় দলের জেলাস্তরের বৈঠক চলছিল। সেখানেও কিছু লোকজন ঢুকে পড়েন। শুরু হয় গোলমাল। পুলিশ এসে সে বার পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিল। ঘটনার পরে পরেশনাথ রজক নামে এক ব্যক্তি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী, বিজেপির দুই জেলা সম্পাদক বিবেক রঙ্গা, জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতোর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ লিখিত ভাবে দায়ের করেন। বৃহস্পতিবারের মিছিলের নেতৃত্বও দিয়েছেন পরেশনাথবাবু। বিদ্যাসাগরবাবুর দাবি, পরেশনাথ রজকে আগেই দল বিরোধী কাজের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

আজ, শুক্রবার দুপুরে পাড়ার মহুলাতে দিলীপ ঘোষের সভা করার কথা। তার আগে আবার এমন মিছিল বড় রাস্তায় নেমে পড়ায় কার্যতই অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। পরেশনাথবাবু বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন মণ্ডলের নিচুতলার পুরনো নেতাকর্মীরা পুরুলিয়ায় বিজেপিকে বাঁচাতে পথে নেমেছি। এখন দল যে ভাবে চলছে, তার প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামা ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনও রাস্তাই খোলা নেই।’’ তাঁর অভিযোগ, যে কর্মীরা দলের হয়ে কাজ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না জেলা সভাপতি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে জেলা সভাপতির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

পরেশনাথবাবুর বক্তব্য, ‘‘দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও আমরা অপসারণ চাইছি। বাংলার মানুষ এখন বিজেপিকে চাইছেন। কিন্তু সেই দলের রাজ্য সভাপতি হিসেবে তিনি যে সব উল্টোপাল্টা মন্তব্য করছেন, সেগুলি মানুষ মোটেও পছন্দ করছেন না।’’ মিছিলে শামিল হরি হালদার বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা জেলায় ভাল ফল করেছি। কিন্তু আমাদের জয়ী প্রার্থীরা তৃণমূলে চলে যাচ্ছেন। অদ্ভূত ভাবে জেলা সভাপতি ও রাজ্য সভাপতি নীরব।’’

দিলীপ ঘোষ এ দিনের ঘটনার ব্যাপারে ফোনে বলেন, ‘‘ওঁদের দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। এখন তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাত করে গোলমাল পাকাচ্ছেন।’’ একই কথা বলছেন বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মনে হচ্ছে, এর পিছনে তৃণমূল থাকতে পারে।’’

তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি রথীন্দ্রনাথ মাহাতোর পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির দু’পক্ষ একে অন্যকে তৃণমূল বলছে। কী হচ্ছে, মানুষ সেটা পরিষ্কার বুঝতে পারছেন। যাঁদের সত্যি নীতি বা আদর্শ রয়েছে, তাঁরা আমাদের দিকেই চলে আসছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Police BJP Dilip Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE