অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
তিনি নেই। কিন্তু তাঁর কৌশলেই ভরসা রাখছে তৃণমূল। জেলবন্দি জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল যে ভাবে ভোটের আগে প্রস্তুতি নিতেন, সেই পথেই হাঁটতে চায় জেলা তৃণমূল।
জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর প্রতিটি নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিতেন কেষ্টদা তথা অনুব্রত। শুধু নিজের জেলা বীরভূমই নয়, তাঁর দায়িত্বে থাকা বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ বা নদিয়া জেলার একাংশে একই পথে প্রস্তুতি নিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কী সেই প্রস্তুতি? কর্মিসভা করে বুথ ধরে ধরে বিগত ভোটের ফলাফলের পর্যালোচনা করেছেন তিনি। কোন বুথে বিরোধীদের থেকে কত ভোটে পিছিয়ে আছে শাসক দল, বা ভোটের মার্জিন কত কমেছে তা জানতে চেয়েছেন এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকর্মী বা পঞ্চায়েত প্রধানদের। জানতে চান খারাপ ফলের কারণও।
ভোটের ফল খারাপ হলে দলের নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড় করিয়ে তুলোধোনা করতেও ছাড়েননি অনুব্রত। তেমন ভিডিয়োও একাধিকবার ছড়িয়েছে। অনেক সময় খারাপ ফলাফলের কারণ জানতে গিয়ে অস্বস্তির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বা অনুন্নয়নের অভিযোগ শুনতে হয়েছে। যা শুনে দৃশ্যতই মেজাজ হারিয়েছেন অনুব্রত। দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিভিন্ন কর্মিসভায় নেতাকর্মীদের হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়া বা সভা থেকে বের করে দেওয়ার মতো অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। তবুও সমান তালে ‘হোমওয়ার্ক’ চালিয়ে গিয়েছেন অনুব্রত।
কখনও বুথ ভিত্তিক লিড বেঁধে দিয়েছেন। কখনও নির্ধারিত লিড ধরে রাখতে না পারলে সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতাকর্মীদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। কখনও সরিয়েও দিয়েছেন। দলের নেতাকর্মীরা মানছেন, ‘‘ওই হুমকিতেই কাজ হয়েছে। পদ ধরে রাখতে পরিস্থিতি মোকাবিলায় জানপ্রাণ লড়িয়ে দিয়েছেন সবাই।’’ এ বারেও পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন অনুব্রত। কিন্তু গরু পাচার মামলায় সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করায় মাঝপথে তা থেমে যায়।
তবে অনুব্রত না থাকলেও সেই পথেই দলের সংগঠন প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানাচ্ছেন নেতারা। তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই ভাবেই বুথ ধরে ধরে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল আমাদের অবিসংবাদিত নেতা। তাঁর দেখানো পথেই বুথস্তরে কর্মিসভা করে বিগত লোকসভা এবং বিধানসভা নিবার্চনে প্রাপ্ত ভোটের পর্যালোচনা করা হবে।’’
বিরোধীরা অবশ্য অনুব্রতর প্রস্তুতি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না। বিজেপির বোলপুরের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘হোমওয়ার্ক না ছাই! আসলে সন্ত্রাস করে ভোটে জেতার জন্য কর্মীদের ওই ভাবে মদত যোগাতে যেতেন। এ বারে সেই সুযোগ তিনি পাবেন না। জেলেই কাটাতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy