পসরা: বাঁকুড়া শহরের নতুনচটি কৃষক বাজারের অস্থায়ী স্টল। নিজস্ব চিত্র
কিসান মান্ডির অস্থায়ী দোকানিদের উপরে এ বার ভাড়া বসাল বাঁকুড়া নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি।
ইতিমধ্যেই ব্যবসায়ীদের বড় অংশের সঙ্গে এই সংক্রান্ত চুক্তি প্রক্রিয়া সারা হয়ে গিয়েছে। আগামী মাস থেকেই চুক্তি নির্ধারিত ভাড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেওয়া হবে বলে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি সূত্রে খবর। তবে করোনা-পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কিসান মান্ডির ব্যবসায়ীদের একাংশ। যদিও বাঁকুড়া নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব তথা জেলা সহ-কৃষি বিপণন আধিকারিক শান্তনু বিশ্বাসের দাবি, ‘‘অধিকাংশ ব্যবসায়ীই চুক্তি পাকা করেছেন। কেউ, কোনও অসুবিধার কথা জানাননি।”
বছর দু’য়েক আগে বাঁকুড়া শহরের রাস্তা দখল মুক্ত করতে হকারদের সরিয়ে নতুনচটি এলাকার কিসান মান্ডিতে তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়। অধিকাংশ হকারই প্রথমে প্রশাসনের কড়াকড়িতে কিসান মান্ডিতে গিয়ে বসা শুরু করেছিলেন। তবে কয়েকমাসের মধ্যে প্রশাসনিক কড়াকড়ি শিথিল হতেই ফের কিসান মান্ডি ছেড়ে শহরের রাস্তার পাশে পুরনো জায়গাতেই ফিরে আসেন অনেকে।
স্থানান্তরিত হওয়া হকারদের একাংশ অবশ্য অস্থায়ী দোকান গড়ে কিসাননমান্ডিতেই ব্যবসা করছেন। সদ্য কিসাননমান্ডির হকারদের সঙ্গে অস্থায়ী দোকানের ভাড়ার পাকাপাকি চুক্তি করতে উদ্যোগী হয়েছে কৃষি বিপণন দফতরের আওতায় থাকা বাঁকুড়া নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি।
নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে দু’বছরের জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে। অস্থায়ী দোকানের জন্য নেওয়া জায়গার প্রতি বর্গফুটে পাঁচ টাকা করে ভাড়া ধার্য করা হয়েছে। কিসান মান্ডির মধ্যে থাকা জনা পঞ্চাশেক ব্যবসায়ীর মধ্যে চল্লিশ জনের বেশি ব্যবসায়ী চুক্তি সই করে দফতরে জমা দিয়েছেন। যদিও অনেকেই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে ছাড়ছেন না।
কিসান মান্ডির ফুল ব্যবসায়ী চন্দন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মান্ডিতে বসানোর সময় ভাড়ার কথা বলা হয়নি। এখন ভাড়া ধার্য হলেও আমার আপত্তি নেই। তবে করোনা-পরিস্থিতিতে ব্যবসা লাটে উঠেছে।” তিনি জানান, দফতরের ধার্য করা ভাড়ার নিরিখে প্রতি মাসে তাঁর দোকানের ভাড়া ছ’শো টাকার বেশি পড়ছে। তিনি বলেন, “এখন বিক্রিবাটার যা হাল, তাতে কোনও ভাবেই ওই ভাড়া দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। বেচাকেনা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসনের ভাড়ায় ছাড় দেওয়া উচিত।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, কিসান মান্ডির অস্থায়ী দোকানের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়ার সিদ্ধান্ত বহু আগেই প্রশাসনিক ভাবে নেওয়া হয়। করোনা-পরিস্থিতির কারণেই তা কার্যকর করা হয়নি। কেন ভাড়া নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?
বাঁকুড়া নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কর্তারা জানাচ্ছেন, মাস পিছু বাঁকুড়া কিসান মান্ডির বিদ্যুৎ বিল আসে কুড়ি-পঁচিশ হাজার টাকা। মান্ডিতে ২২টি পাকা স্টল থাকলেও ১০টি স্টল সরকারি ভাবে বিনা ভাড়ায় ব্যবহার করা হয়। বাকি বারোটি স্টল থেকে হাজার দশেক টাকা ভাড়া আদায় হয়। ফলে, দফতরকে ভর্তুকি দিয়ে কিসান মান্ডি চালাতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অস্থায়ী দোকান গড়ে বসা ব্যবসায়ীদের কাছ ভাড়া আদায় করে কিসান মান্ডি পরিচালনার খরচ ওঠানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাঁকুড়া নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব তথা জেলা সহ-কৃষি বিপণন আধিকারিক বলেন, “সরকারি জায়গায় বিনা ভাড়ায় বসে ব্যবসা চালানো যায় না। তা ছাড়া, কিসান মান্ডি পরিচালনার খরচও তোলা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা চুক্তির আওতায় এলে তাঁরাও নানা সুবিধা পাবেন। সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করেই প্রশাসনিক ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy