শিব-গাজন উপলক্ষে ঝালদার বড়গ্রাম মন্দিরে পুজো দেওয়ার লাইন। স্থানীয় দঙ্গল, চেকা, বড়গ্রাম-সহ নানা গ্রাম থেকে প্রচুর মহিলা আসেন এখানে। ছবি: প্রদীপ মাহাতো।
চৈত্র সংক্রান্তি মানেই গাজনের বাদ্যির আওয়াজে মেতে ওঠে বাঁকুড়া জেলার নানা প্রান্ত। এ বারও সেই ছবির হেরফের হয়নি। গাজন উপলক্ষে মেতে উঠেছে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, বড়জোড়ার মতো জেলার নানা জায়গা। বাঁকুড়ায় দ্বারকেশ্বর নদের পাড়ে অবস্থিত এক্তেশ্বর শিব মন্দির জেলার প্রাচীন মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম। প্রতি বছর বাংলা বছরের শেষের তিনদিন এখানে গাজন বসে। প্রথম দিন পাটস্নান, দ্বিতীয় দিন রাত গাজন ও তৃতীয় দিন দিনগাজন অনুষ্ঠিত হয়। লক্ষাধিক মানুষ ও হাজার হাজার ভক্তের সমাগমে মেতে ওঠে এক্তেশ্বর। ঠিক কোন সময় থেকে এখানে গাজন শুরু হয়েছিল তার সঠিক উত্তর পাওয়া যায় না। তবে এখানকার বোলেবোম সেবা সমিতি গাজন কমিটির সম্পাদক কিশোর মুরারকা বলেন, “প্রবীন পুরোহিতেরা বলেন, ‘এখানকার গাজন ৬০০ বছরেরও প্রাচীন।’ এ বার রাজ্যের নানান প্রান্তের প্রায় ১৯ হাজার মানুষ ভোক্তা এসেছেন।” একই ভাবে জেলার প্রাচীন গাজন হিসেবে পরিচিত বিষ্ণুপুরের ডিহর গ্রামের ষাঁড়েশ্বরের গাজন। এক্তেশ্বরের মতোই ষাঁড়েশ্বরও দ্বারকেশ্বর নদের পাড়েই অবস্থিত। এখানকার মন্দিরে জৈন স্থাপত্যের ছাপ পাওয়া যায়। এক্তেশ্বরের গাজনের সঙ্গেই শুরু হয় ষাঁড়েশ্বরের গাজনও। চলতি বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ ভোক্তা হয়েছেন ষাঁড়েশ্বরে। গজনের মুল আকর্ষণ বাউল গান। সোমবার এই দু’টি জায়গাতেই সাড়ম্বরে রাত গাজন অনুষ্ঠিত হয়। বড়জোড়ার বাবা ভূবনেশ্বরের গাজনও শতাব্দী প্রাচীন। দু’দিন ধরে গাজন হয় এখানে। সোমবার প্রথম দিন এখানে দিন গাজন অনুষ্ঠিত হল। গাজনের পাশাপাশি যেমন খুশি সাজো, ছৌনাচ, যাত্রাপালার মতো নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বড়জোড়া গ্রাম্য ষোলআনা কমিটির ম্যানেজার প্রণবকুমার মণ্ডল বলেন, “বড়জোড়ার গাজন প্রায় ১৫০ বছর প্রাচীন। গোটা ব্লকের কয়েক লক্ষ মানুষ গাজনে যোগদেন।” বড়জোড়ার জগন্নাথপুরের গাজনও জেলার অন্যতম প্রাচীন গাজন। শনিবার থেকে এখানে চারদিনের গাজন শুরু হয়েছে। সোমবার নীলপূজা ও রাতগাজন অনুষ্ঠিত হয়। আজ, মঙ্গলবার এখানে চড়ক পুজো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy