রোটা ভাইরাসের প্রতিষেধক এলেও তা যথেষ্ট নয়। ফলে বাঁকুড়া স্বাস্থ্যজেলায় নবজাতকদের ওই প্রতিষেধক কতখানি দেওয়া যাবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা কিছুতেই কাটছে না।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্যভবন থেকে রোটা ভাইরাসের প্রতিষেধক পাঠানো হয়েছে। তবে জেলায় এ মুহূর্তে ১২ হাজার নবজাতক রয়েছে, যাদের কেউ প্রথম প্রতিষেধক পাবে, আবার কেউ দ্বিতীয় প্রতিষেধক নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য ভবন থেকে জেলায় এসেছে ছ’হাজার প্রতিষেধক। এখানেই চিন্তা দানা বেঁধেছে।
বাঁকুড়ার ডেপুটি সিএমওএইচ (৩) সজল বিশ্বাস জানান, যে নবজাতকেরা একটিও প্রতিষেধক পায়নি তাদেরই অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রোটা ভাইরাসের প্রতিষেধক দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “প্রতিষেধকের একটিও ডোজ় শরীরে নেওয়া থাকলে ঝুঁকি কম হয়। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’
তিনি জানান, জন্মের পরে ছ’সপ্তাহে রোটা ভাইরাসের প্রথম প্রতিষেধক ও ১৪ সপ্তাহে দ্বিতীয়টি দেওয়ার নিয়ম। এক্ষেত্রে সময় মতো দ্বিতীয় ডোজ় না পেলে কোনও সমস্যা হবে কি না, তা নিয়েও দুর্ভাবনা রয়েছে।স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য জানান, দ্বিতীয় ডোজ় পরেও নেওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে সমস্যা কিছু হবে না।
মঙ্গলবার রাতে প্রতিষেধক জেলায় আসার পরে বুধবারই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রোটা ভাইরাসের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হবে। ডেপুটি সিএমওএইচ (৩) বলেন, “আমরা আশাবাদী, শীঘ্রই আরও প্রতিষেধক পাঠানো হবে। সদ্য হাতে আসা প্রতিষেধক দেওয়ার প্রক্রিয়ার মাঝেই বাকি প্রতিষেধক যাতে জেলায় পাঠানো হয়, রাজ্যের কাছে সেই দাবি আমরা জানিয়েছি।”
বাঁকুড়ার বধূ রুম্পা দাস জানান, দেড় মাসের মেয়েকে রোটা ভাইরাস প্রতিষেধক দিতে গত তিন দিন ধরে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঘুরেছেন। কোথাও ওই প্রতিষেধক পাননি। শেষে বুধবার বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলা দফতরে প্রতিষেধক পেয়েছেন। তিনি বলেন, “দ্বিতীয় ডোজ়ও ঠিক সময়ে যেন পেয়ে যাই এটাই আমাদের দাবি।”
এ দিকে বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলাতেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছেন। সেখানেও রোটা ভাইরাসের প্রতিষেধক অমিল ছিল। মঙ্গলবার রাতে কিছু প্রতিষেধক পাঠানো হয়েছে। বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক গোপাল দাস জানান, মোট সাত হাজার প্রতিষেধকের চাহিদা রয়েছে। অথচ রাজ্য থেকে পাঠানো হয়েছে তিন হাজার ৬০০টি। তিনি বলেন, “আপাতত যেগুলি পেয়েছি, সেগুলি দিয়েই কাজ চালানো হচ্ছে। শীঘ্রই বাকি প্রতিষেধকও পেয়ে যাব বলে আমরা আশাবাদী।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)