আদালতে। নিজস্ব চিত্র
জোড়া খুনে অভিযুক্ত বাঁকুড়া সদর থানার গাজাড়্যা গ্রামের অরূপ চৌধুরীকে মঙ্গলবার ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠাল বাঁকুড়া আদালত। তার হয়ে কোনও উকিল এ দিন সওয়াল করেননি বলে জানা গিয়েছে।
সোমবার সকালে বাঁকুড়া সদর থানার মগরা তেমাথা মোড়ে লিচু রায় (৭৪) নামে এক বৃদ্ধা এবং অজিত চৌধুরী (৫৭) নামে এক প্রৌঢ়কে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগে অরূপকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বছর তিরিশের অরূপ মানসিক রোগে আক্রান্ত বলে দাবি করেছে তার পরিবার। যদিও তা মানতে নারাজ গ্রামের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যেরা।
আদালতে চত্বরে সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে এ দিন নিজেকে ‘মানসিক রোগী’ বলে দাবি করে অরূপ। বলে, ‘‘আমি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। আমি ডাক্তার দেখাতাম। ‘মার্ডার’ করতে চাইনি। ওরা সবাই আমাকে জ্বালাচ্ছিল।” যা শুনে লিচুদেবীর ছোট ছেলে স্বপন রায়ের মন্তব্য, “অরূপ শিক্ষিত ও ভীষণ চালাক। শাস্তির হাত থেকে বাঁচতেই নিজেকে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত বলে দাবি করছে। আমরা ওর কড়া শাস্তি চাই।” অজিতবাবুর বড় ছেলে হৃদয়বাবুর প্রতিক্রিয়া, “আগাম পরিকল্পনা করেই জোড়া খুন করেছে অরূপ। ওর শাস্তি চাই।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় লিচুদেবী এবং অজিতবাবুর বিরুদ্ধে বিস্তর ক্ষোভের কথা তদন্তকারী আধিকারিকদের জানিয়েছে অরূপ। আরও জানা গিয়েছে, রাতে ঘুম হচ্ছে না বলে পুলিশকর্মীদের জানিয়েছিল অরূপ। ডাক্তার দেখানোর আবেদনও জানিয়েছিল সে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় অসংলগ্ন কথা বললেও, অরূপের আচরণ ছিল শান্ত।
এ দিন আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগে বাঁকুড়া মেডিক্যালে অরূপের শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “ধৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, নিহতদের প্রতি তার মনে অনেক রাগ জমে ছিল। তবে এ নিয়ে আরও নিশ্চিত হতে তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’
খুনের কারণ সম্পর্কে সোমবার হৃদয়বাবুর দাবি ছিল, ‘‘জমি নিয়ে পুরনো আক্রোশের জেরেই অরূপ বাবাকে খুন করেছে। সে দৃশ্য দেখে ফেলায় মারা হয় লিচুদেবীকে।’’ লিচুদেবীর দুই ছেলে শক্তিপদ রায় এবং স্বপন রায় অভিযোগ করেছিলেন, পাশের জঙ্গল থেকে কাঠ কুড়নো নিয়ে লিচুদেবী-সহ অনেকের সঙ্গেই একাধিক বার বচসা হয়েছে অরূপের। সে রাগেই ‘হামলা’ বলে দাবি করেছিলেন নিহতের দুই ছেলে।
আদালত চত্বরে এ দিন বারবার অরূপকে খুনের কারণ নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও সে মন্তব্য করেনি। শুধু বলে, ‘‘একাই এই খুন করেছি।’’
সোমবার ঘটনার পরে অরূপের বাড়িতে হামলা হয়। এলাকা ছাড়েন তার পরিবারের সদস্যেরা। এ দিনও তাঁরা গ্রামে ফিরতে পারেননি। পুলিশ সুপার বলেন, “ওই পরিবারকে গ্রামে ফেরানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy