বাঁকুড়ায় বুলডোজ়ার দিয়ে ভাঙা হচ্ছে পরিত্যক্ত বাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
ফুটপাতের পর এ বার সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে পদক্ষেপ করল বাঁকুড়া সদর মহকুমা প্রশাসন ও পুলিশ। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার মাচানতলা এলাকায় বেদখল হয়ে থাকা জমি দখলমুক্ত করতে এক সঙ্গে অভিযান চালাল মহকুমা প্রশাসন ও পুরসভা। ওই এলাকায় বেদখল করে রাখা পরিত্যক্ত একটি বাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় একটি বস্তিকে দ্রুত জমি খালি করার নির্দেশ দেয় প্রশাসন।
বাঁকুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র মাচানতলা। এখানে দীর্ঘ দিন ধরে বিশাল সরকারি জমি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে । ধীরে ধীরে সেই জমিতে গড়ে ওঠে একটি বস্তি। ওই বস্তি উচ্ছেদের ব্যাপারে একাধিক বার বাঁকুড়া পুরসভা এবং বাঁকুড়া সদর মহকুমা প্রশাসন হুঁশিয়ারি দিলেও কোনও অজ্ঞাত কারণে জমিটি এত দিন পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি প্রশাসন। মঙ্গলবার সেই বস্তিতে হাজির হন বাঁকুড়া সদর মহকুমার মহকুমা শাসক অয়ন দত্তগুপ্ত , বাঁকুড়ার পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার, উপ-পুরপ্রধান হীরালাল চট্টরাজ। ছিলেন বাঁকুড়া সদর থানার আইসি সুজয় তুঙ্গা। সরকারি জমি দখল করে থাকা একটি পরিত্যক্ত ভবন বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় প্রশাসন। সেই সঙ্গে বস্তিতে বসবাসকারী প্রায় ১৭ টি পরিবারকে অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়া সদরের মহকুমা শাসক বলেন, “আজ (মঙ্গলবার) পুরসভা, পুলিশ এবং মহকুমা প্রশাসনের তরফ থেকে আমরা যৌথ ভাবে এলাকায় এসেছিলাম। ওই জায়গায় বসবাসকারীদের অনুরোধ করলাম অন্যত্র সরে যেতে। স্থানীয়দের জমির যদি কোনও বৈধ নথি থেকে থাকে, তাহলে তা নিয়ে দফতরে যোগাযোগ করারও অনুরোধও করা হয়েছে। না-হলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”
সরকারি ওই জমিতে বসবাসকারীদের এক জন শেখ ইসলাম। তিনি বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে আমরা এই জমিতে বসবাস করে আসছি। আমাদের তো দ্বিতীয় কোনও বাড়ি নেই। আজ প্রশাসন হঠাৎ করে উঠে যেতে বলল। আমরা এখন কোথায় যাব?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রশাসন আগে আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক। তার পর আমরা জমি ছাড়ব।’’ বেবি খাতুন নামে আর এক বাসিন্দা বলেন, “এর আগেও এক বার প্রশাসন আমাদের বাড়ি ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু বিকল্প না-থাকায় আমরা আবার ওই জমিতে বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছি। এখন প্রশাসন আমাদের তুলে দিতে চাইলে আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।”
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি জমির বেআইনি দখলদারি উচ্ছেদের জন্য প্রতিটি পুরসভাকে কড়া নির্দেশ দেন। তার পর বাঁকুড়া শহরের বিভিন্ন রাস্তার ফুটপাত দখলমুক্ত করতে নেমে পড়ে পুরসভা। একাধিক বার পুরসভার তরফে ফুটপাত দখলমুক্ত করার ব্যাপারে বাঁকুড়া শহরের ব্যবসায়ীদের কাছে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু তার পরেও ব্যবসায়ীদের একাংশ রাস্তার ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চালানোয় কঠোর পদক্ষেপ করে পুরসভা। বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয় ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা বেশ কিছু নির্মাণ। বাঁকুড়া শহরের রাস্তার ফুটপাত কিছুটা দখলমুক্ত হতেই এ বার শহরের কেন্দ্রস্থলে থাকা জমি উদ্ধারে হাত লাগিয়েছে বাঁকুড়া পুরসভা ও মহকুমা প্রশাসন ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy