প্রতাপবাগান এলাকার রাস্তার হাল এমনই। —নিজস্ব চিত্র
কোথাও পিচ উঠে গিয়ে রাস্তার মাটি বেরিয়ে পড়েছে। কোথাও আবার রাস্তার মাঝে হাঁ করে আছে গর্ত। কয়েক দফা বৃষ্টিতে বাঁকুড়া শহরের রাস্তার এখন এমনই দশা। খানাখন্দে পড়ে মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে। পুজোর মুখে শহরের রাস্তাঘাটের এমন অবস্থায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে পুরবাসীর মধ্যে। অবিলম্বে রাস্তা সংস্কারের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
বাঁকুড়া শহরের বেশ কিছু রাস্তা এমনিতেই বেহাল হয়ে ছিল। তার উপরে বৃষ্টিতে রাস্তা আরও ভেঙে পড়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের ২৪টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ রাস্তার এমন দুরাবস্থা। কাটজুড়িডাঙা, স্কুলডাঙা, প্রতাপবাগান, গোবিন্দনগর, ভৈরবস্থানের মতো ব্যস্ততম এলাকাগুলির রাস্তাঘাট খানাখন্দে ভরে গিয়েছে।
বাঁকুড়ার একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সমীরণ সেনগুপ্ত সম্প্রতি এমনই রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। তিনি জানান, প্রতাপবাগান পার্ক সংলগ্ন রাস্তা ছোট-বড় গর্তে ভরে গিয়েছে। ক’দিন আগে ওই পথে এক স্কুল ছাত্রীকে পাশ কাটাতে গিয়ে বড় গর্তের সামনে পড়ে যায় একটি গাড়ি। সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষেন গাড়ির চালক। আর ওই গাড়ির ঠিক পিছনেই মোটরবাইকে ছিলেন সমীরণবাবু। গতি নিয়ন্ত্রণ না করতে পেরে গাড়িটির পিছনে গিয়ে ধাক্কা মারেন তিনি। সমীরণবাবুর কথায়, “রাস্তায় গর্ত না থাকলে ওই দুর্ঘটনা ঘটত না। শুধু প্রতাপবাগানই নয়, শহরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তার অবস্থাও একই।”
অরবিন্দনগর এলাকার বাসিন্দা জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, শহরের রাস্তায় রাতে সাইকেল নিয়ে বের হওয়া বেশ ঝুঁকির হয়ে পড়েছে। এখনও শহরের বিভিন্ন রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো নেই। অন্ধকারে রাস্তায় গর্তে পড়ে অনেকেই চোট পাচ্ছেন। শহরের স্কুলডাঙা এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা চণ্ডীদাস মুখোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, শহরের রাস্তার এই জীর্ণ দশার জন্য সাইকেল বা রিকশায় চড়ে যাতায়াত করাই দায় হয়ে উঠেছে। ঝাঁকুনির চোটে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। একই কারণে ক্ষোভ ছড়িয়েছে শহরের রিকশা ও টোটো চালকদের মধ্যেও। বাঁকুড়ার রিকশা চালক শিবু মালাকার বলেন, ‘‘ভাঙাচোরা রাস্তায় ঝাঁকুনিতে বয়স্ক ও অসুস্থদের খুবই কষ্ট হচ্ছে। ঘন ঘন রিকশার যন্ত্রপাতিও বিগড়ে যাচ্ছে। এতে খরচ বেড়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের আক্ষেপ, জেলা সদরের রাস্তারই এই হাল! তাঁরা অবিলম্বে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে পুরসভাকে।
শহরের রাস্তাঘাট হাল খারাপ হলেও এখনই পুরোমাত্রায় সংস্কার সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত। তবে সাময়িক ভাবে এই সমস্যা মেটাতে রাস্তার খানা খন্দ বোজানোর কাজ শীঘ্রই শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মহাপ্রসাদবাবু বলেন, “শহরের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য কয়েক কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছি আমরা। তবে শীঘ্রই গোটা শহর জুড়ে পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু হবে। সে জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি হবে। তাই রাস্তা সারাই এখনই শুরু করা যাচ্ছে না।”
পুরপ্রধান জানান, পুরসভার পূর্ত বিভাগ শহরের রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করেছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী আপাতত শহরের কমরার মাঠ-সিনেমারোড, মাচানতলা-ইঁদারাগড়া মোড়, স্কুলডাঙা চার্চমোড়-মিশ্রপাড়া, ভৈরবস্থান-কাটজুড়িডাঙা ও ভৈরবস্থান-গোবিন্দনগর এই পাঁচটি রাস্তায় খানা খন্দ ভরাট করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে রাস্তা মেরামতির ওই কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুজোর আগেই রাস্তা সারাইয়ের কাজ শেষ করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy