রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও সাংসদ মহুয়া মৈত্র। ছবি: সুিজত মাহাতো
পশ্চিম বর্ধমানে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর পাশে অবৈধ কয়লা কারবারে অভিযুক্ত এক ব্যবসায়ীকে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার হুড়ায় তৃণমূলের সভায় রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় সে প্রসঙ্গ তুলে নিশানা করলেন নিজের পুরনো দল বিজেপিকে। হুড়ার লধুড়কার এই মাঠেই গত সপ্তাহে সভা করেন বিজেপির তারকা নেতা মিঠুন। এ দিন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র আবার মিঠুনকে পঞ্চায়েত ভোটে কোনও আসনে জেতার চ্যালেঞ্জ ছোড়েন।
বাবুলের দাবি, ‘‘আসানসোলে বাইকে চেপে কয়লার ট্রাক ধরতাম। কয়লা মাফিয়ারা পালিয়ে যেত। আমি গাড়ির চাবি নিয়ে চলে আসতাম। অথচ এই বিজেপি কী করল? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেছেন। আমিও টুইট করেছি। প্রহ্লাদজীর কাছেই ওই দু’জনের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগের গোছা গোছা ফাইল জমা আছে। কী ভাবে তাঁরা ইসিএলের আধিকারিকদের ‘ব্ল্যাকমেল’ করে বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা তুলেছেন। অথচ ভোটের আগেই তাঁরা কয়লা মাফিয়াদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ালেন।’’
ওই ব্যবসায়ী পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জের বক্তারনগরের জয়দেব খাঁ তখন স্পষ্ট কিছু জানাননি। টুইটের ছবিতে বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইকেও দেখা গিয়েছিল। এ দিন লক্ষণের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বাবুল যাঁকে এখন কয়লা মাফিয়া বলছেন, ২০১৯-এর ভোটে তাঁকে নিয়েই প্রচার করেছিলেন। আর আসানসোলে কত দুর্নীতি করেছেন, তার তথ্য আমাদের কাছে আছে।’’
সাংসদ মহুয়ার নিশানায় ছিলেন মিঠুন। তাঁর মতে, ‘‘মিঠুন চক্রবর্তী অনেক বড় অভিনেতা। তিনি জাতীয় সম্মান পেয়েছেন। তাঁকে আমি সম্মান করি। কিন্তু তিনি কি কোনওদিন পঞ্চায়েত নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জিতেছেন? তাঁকে বলছি, যে দিন আপনি পঞ্চায়েতের কোনও আসনে দাঁড়িয়ে জিতবেন, সে দিন আমি আপনার পাল্টা সভা করব।’’
জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের দাবি, ভিড়ের নিরিখে ২৩ নভেম্বরের বিজেপির কর্মী সম্মেলনকে পিছনে ফেলে দিয়েছে এ দিনের সভা। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘মাঠেই ছিলেন ৩০ হাজার মানুষ। বহু কর্মী-সমর্থক ঢুকতে পারেননি।’’ যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল সারা জেলা থেকে লোক এনেছে। কিন্তু তাঁদের সভায় কর্মীরা এসেছিলেন স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে, নিজেদের খরচে। তাতেই মাঠ উপচেছিল।
সভায় ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শান্তিরাম মাহাতো, রাজ্য সম্পাদক স্বপন বেলথরিয়া, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো, রাজীবলোচন সরেন প্রমুখ। বিজেপিকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ দাবি করেন বাবুল। সঙ্গে কটাক্ষ, ‘‘অর্ধেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ফাইলই পড়তে পারেন না। তাঁদের কাজ হচ্ছে ফাইলে স্ট্যাম্প মেরে ক্যাবিনেট মন্ত্রীদেরকাছে পাঠিয়ে দেওয়া।’’
রাজ্য রাজনীতিতে কু-কথা আমদানির জন্য বিজেপির দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে সিপিএমের বিনয় কোঙারেরও নাম করেন বাবুল। যদিও এ দিন বাবুল নিজেই বিজেপির পুরুলিয়ার বিধায়কদের ‘জোকার’ বলে কটূ মন্তব্য করেছেন, অভিযোগ বিরোধীদের। পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের খোঁচা, ‘‘বিমানে এক জনকে ধরে প্রথমবার লোকসভায় টিকিট পেয়েছিলেন। তিনি কতটা রাজনীতি বোঝেন সন্দেহ রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy