বর্ণহীন: সাদা-কালোর পসরা। পৌষমেলায় বিশ্বভারতীর তিন প্রাক্তনীর দোকানে। নিজস্ব চিত্র
রঙিন পৌষমেলায় একটা স্টল বর্ণহীন। সাদা-কালোয় মোড়া। সেই দোকানের সব সামগ্রীই সাদা-কালোয়। স্টলের মাটিও ঢাকা ছোট ছোট সাদা-কালো পাথরে। সেই স্টলের থিম পুরনো সাদা-কালো গন্ধে ঢাকা— ‘শান্তিনিকেতনের প্রাক্তনী’।
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন তিন পড়ুয়ার উদ্যোগে এ বারই প্রথম পৌষমেলায় এই স্টল খোলা হয়েছে। শুধুমাত্র প্রাক্তনীদের কথা চিন্তা করে। সেখানে গেলেই আড্ডা, গল্প, আনন্দের পাশাপাশি মিলছে চা, মুড়ি-চানাচুর থেকে শুরু করে দুপুর কিংবা রাতের খাবারও। তাও বিনামূল্যে। শুধু প্রাক্তনী বলেই নন, এই সুবিধা পাচ্ছেন পৌষমেলাj যে কোনও পর্যটক।
কলাভবনের প্রাক্তনী নিবেদিতা বসু বর্তমানে শিকাগোর ইলিনয়ে থাকেন। শিক্ষাভবনের প্রাক্তন ছাত্র, বর্তমানে ক্লিভল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও ক্যানসার গবেষক বর্ষণজিৎ মজুমদার এবং একটি আইটি ফার্মের মালিক তথা পাঠভবনের প্রাক্তনী কৌশিক মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই ওই স্টল তৈরি হয়েছে। স্টল ভাড়া থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়ার খরচ করছেন তাঁরাই। সেই স্টলে রয়েছে কলাভবনের প্রাক্তন ছাত্র তথা বর্তমান অধ্যক্ষ গৌতম দাস, কলাভবনের প্রাক্তন অধ্যাপক জনকঝঙ্কার নার্জারি, যোগেন চৌধুরী সহ বিখ্যাত শিল্পীদের কাজ। এ ছাড়াও রবীন্দ্রভবনের প্রাধিকারিক নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যালিগ্রাফি পেন্টিং ও বই, শ্যামশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরও অনেক প্রাক্তনীর বইও। তা ছাড়া রয়েছে সাদা-কালো টি-শার্ট, কাপ, সেরামিকের জিনিস, ক্যালেন্ডার।
তিন উদ্যোক্তা জানান, এই সমস্ত জিনিস বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যাবে, কোনও লভ্যাংশ না রেখে পুরোটাই ‘কলাভবন স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফান্ড’-এ দেওয়া হবে। শুধুমাত্র প্রাক্তনীদের জন্য এই উদ্যোগ। বাণিজ্যিক কারণে ওই স্টল করেননি। কৌশিকবাবু জানান, অনেক সময় দেখা যায় প্রাক্তনীদের কেউ হয়তো বই প্রকাশ করেছেন, কিন্তু সেই বই কোনও স্টলে রাখতে গেলে কমিশন হিসেবে কিছু টাকা দিতে হয়। তাঁদের স্টলে কমিশন লাগবে না। বরং নিজেদের প্রকাশিত বই এমনিই রাখতে পারবেন প্রাক্তনীরা। যতগুলি বই যে টাকায় বিক্রি হবে পুরোটাই লেখক বা লেখিকার হাতে তুলে দেওয়া হবে। ওই স্টলে বসে একটু জিরিয়ে নেওয়া যাবে।
ওই দোকানে থাকছে খাওয়ার ব্যবস্থাও। প্রতি দিন সন্ধ্যায় আদিবাসী নাচের আসর বসছে স্টলের সামনে।
আজ, শুক্রবার একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছেন তাঁরা। কৌশিকবাবুর কথায়, ‘‘এ বছর স্টলের মাপ খুব ছোট হয়েছে। এক দম শেষ মুহূর্তে জায়গা পেয়েছি। সামনের বছর আরও বেশি জায়গা নিয়ে স্টল করার ইচ্ছা থাকবে।’’ প্রাক্তনীদের জন্য ওই দোকানে রয়েছে ব্যাগেজ কাউন্টারও। সেখানে ব্যাগ রেখে মেলায় ঘুরছেন প্রাক্তনীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy