কর্মী সম্মেলনে বুথ সভাপতি (বাঁ দিকে)। এমনই হাল রাস্তার। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কাছে বেহাল রাস্তা নিয়ে ফের সরব হলেন এক বুথ সভাপতি। যদিও সিউড়ি ২ ব্লকের মতো ‘উত্তপ্ত’ পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। উত্তেজিত না হয়ে ধৈর্য্য ধরে ওই বুথ সভাপতিকে বোঝাবার চেষ্টা করেন অনুব্রত। আশ্বাস দেন রাস্তাটির বিষয়ে তিনি অবশ্যই দেখবেন। তবে কাজ হলে ভোট বাক্সে তার ফল প্রতিফলিত হতে হবে বলে স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে সেই প্রতিশ্রুতিও আদায় করে নেন জেলা সভাপতি।
বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড় জনসংযোগ গড়ে তুলতে বুথে বুথে ৬০ জনের কমিটি গড়েছে শাসক দল। কাজ কেমন হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে দিনে তিনটি করে পঞ্চায়েত ধরে বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন করছেন অনুব্রত। রবিবার খয়রাশোল, কেন্দ্রগড়িয়া, রূপসপুর— খয়রাশোল ব্লকের এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীদের নিয়ে বসেছিলেন অনুব্রত। এ দিন সম্মেলনের দ্বিতীয় ভাগে পর্যালোচনা চলছিল রূপসপুর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন বুথ নিয়ে। লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ধরলে গোটা পঞ্চায়েত এলাকার সংখ্যাগরিষ্ঠ বুথে পিছিয়ে রয়েছে শাসক দল। তেমনই একটি বুথ ধরে আলোচনা করতে গিয়ে এক বুথ সভাপতি সমীরণ ঘোষ বলেন, ‘‘ক্ষোভ আছে। এই তো মিটিংয়ে আসতে আসতে দাঁতিন দিঘির কাছে বেহাল রাস্তায় বাসটা বসে গেল। যত পুরুষ ও মহিলা ছিলেন তাঁরা ঠেলে বাস তুলেছেন তারপরই এখানে এলাম।’’ ওই বুথ সভাপতির সংযোজন, ‘‘মাত্র ছ-সাত মাস আগেই রাস্তাটি সংস্কার হয়েছে।’’
জবাবে অনুব্রত বলেন, ‘‘৩৪ বছর বামেরা কিছু করেনি। নয় বছরে এক ভদ্রমহিলা মাথার উপর দেনা নিয়ে একের পর উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। খয়রাশোলে কাজ হয়েছে কি না বলো। সব একদিনে করা সম্ভব নয়। এটা বুঝতে হবে।’’ বুথ সভাপতি পাল্টা বলেন, ‘‘সব ঠিক আছে, কিন্তু আমাদের ওদিকে যদি কোনও মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন বা দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে হাসপাতালে নিয়ে আসার উপায় নেই। অনেকটা ঘুরে যেতে হবে।’’ অনুব্রত খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন দুবরাজপুর থেকে বালিজুড়ি হয়ে লোকপুর পর্যন্ত রাস্তাটি প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় তৈরি হয়েছিল। কয়েক মাস আগে ওই রাস্তার ৮ কিমি সংস্কার হয়েছে। দুবরাজপুরের বালিজুড়ি পঞ্চায়েত এলাকার একটা অংশ খারাপ হয়ে যাওয়াই শুধু নয়, ওই রাস্তার লোকপুর থেকে ডেমুরিয়া ৩-৪ কিমি অংশও অত্যন্ত খারাপ। রাস্তটি ঠিক করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
এ দিন শুধু রাস্তার দাবি নয়, প্রকাশ্যে আসে খয়রাশোলের গোষ্ঠী কোন্দলের ছবিও। কেন্দ্রগড়িয়া অঞ্চলে কেন প্রায় ৪ হাজার ভোটে হারতে হয়েছে প্রশ্ন করতেই খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামল গায়েন ও বর্তমান পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভানেত্রী (যিনি আগের বার সভানেত্রী ছিলেন) অসীমা ধীবরের সঙ্গে সংঘাতের ছবিটা সামনে আসে। মাইক হাতে নিয়ে অসীমা বলেন, ‘‘আমাকে কোনও মিটিংয়ে ডাকা হচ্ছে না। বিভিন্ন অঞ্চলে দলের পুরনো কর্মীর একাংশকে গুরুত্বহীন করে বসিয়ে রাখা হয়েছে।’’ প্রসঙ্গের মধ্যে না ঢুকে খয়রাশোলের পর্যবেক্ষক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আপনার এলাকায় নির্মল বাংলার শৌচাগার গড়া সম্পূর্ণ হয়নি। সেটা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে মানুষের। সেটা সম্পূর্ণ মানেননি অসীমা।’’ তবে দলের সংগঠনের হালহকিকতের খোঁজ নেওয়ার মধ্যে অনুব্রত এ দিন দলের নেতাদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার এনআরসি পাস করেছে। ৭১ সালের দলিল সকল পরিবারের নেই। খেয়াল রাখবেন ভোটার কার্ড ও রেশন কার্ড যেন প্রত্যেক পরিবারে থাকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy