অনুব্রত মণ্ডল। —ফাইল চিত্র
দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা কার্যত ‘স্বীকার’ করে নিলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কার্যত মানলেন, নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরা তৃণমূল ছাড়ার পরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কমেছে।
সোমবার নানুর পঞ্চায়েত সমিতির মাঠে নানুরের বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী-সম্মেলনে অনুব্রতকে বলতে শোনা গেল, ‘‘আর গদাই (গদাধর) নেই। তাই গোষ্ঠীও নেই। সেই হিসেবে বিধানসভায় আমাদের ভাল লিড হওয়ার কথা।’’ জেলা সভাপতির মুখে ওই কথা শোনার পরে চারকলগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক কর্মী অবশ্য বলে ওঠেন, ‘‘এখনও কিছুটা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। আমরা আস্তে আস্তে তা মিটিয়ে নিচ্ছি।’’ অনুব্রত তৎক্ষণাৎ বলে ওঠেন, ‘‘কোনও কথা শুনব না। হারা-জেতা সব বুথে লিড চাই!’’
নানুর অবশ্য অনেক দিন ধরেই শাসকদলের মাথাব্যথার জায়গা। তৃণমূল সূত্রে খবর, নানুরে গদাধর হাজরার সঙ্গে যুব নেতা কাজল শেখের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব ছিল দীর্ঘদিন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেতা নানুর কেন্দ্রে ২০১৬-তে হারতে হয় গদাধরকে। তার পরে ‘সান্ত্বনা পুরস্কার’ হিসেবে গদাধরকে জেলা যুব সভাপতি করা হয়। কাজল কার্যত ‘ব্রাত্য’ হয়ে পড়েন। তাঁকে বহিষ্কারের ঘোষণাও করা হয়। তার পরেও দুই শিবিরের বিবাদে দল বারবার সমস্যায় পড়েছে বলে দাবি তৃণমূলের কর্মীদেরই একাংশের। লোকসভা নির্বাচনের আগে কাজলকে ভোট করানোর দায়িত্ব দেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। নিজের এলাকায় ভাল ফল করেন কাজল। ‘পুরস্কার স্বরূপ’ তাঁকে ব্লক কার্যকরী সভাপতি হিসেবে দলে ফেরানো হয়। তার পরেই গদাধর বিজেপিতে যোগ দেন।
জেলার তৃণমূল নেতারা অবশ্য এর আগে প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করেননি। তবে এ দিন অনুব্রতের কথায় সেই ইঙ্গিতই মিলেছে। দলের নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য যদিও দাবি করেছেন, ‘‘আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। আমরা রেকর্ড ভোটে লিড দেব।’’ অনুব্রত এ দিন মঞ্চে উপস্থিত জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খানকে তাঁর দায়িত্বে থাকা থুপসড়া ও নওয়ানগর-কড্ডা পঞ্চায়েত এলাকায় ১৫ হাজার ভোটের লিড দেওয়ার নির্দেশ দেন। নানুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মধুসূদন পালকে বলেন, ‘‘লিড না হলে পদ থাকবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy