নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। সিউড়িতে প্রশাসন ভবনের সামনে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
রাস্তার উপরে ‘নো এনআরসি’ এবং ‘নো সিএএ’ লিখতে লিখতে এগোলো মিছিল। কাঁধে প্রায় ১০০ ফুটের জাতীয় পতাকা নিয়ে হিন্দি-বাংলা-সাঁওতালি ভাষায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জির বিরুদ্ধে স্লোগান উঠল মিছিলে। সোমবার এনআরসি এবং সিএএ বিরোধী মিছিলে এমনই ছবি দেখল সিউড়ি। এনআরসি এবং সিএএ-র বিরোধিতায় আদিবাসী, হিন্দু ও মুসলিম পা মেলালেন ওই মিছিলে। মিছিল থেকেই শপথ নেওয়া হল, কাগজ তাঁরা দেখাবেন না।
বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের পক্ষ থেকে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে যোগ দিয়েছিলেন রাজকুমার ফুলমালি, মফি শেখ, সুদীপ দাস, অজয় রায়, বিশ্বজিৎ রায়, সম সাইন-সহ ওই মঞ্চের কয়েক হাজার সদস্য। এ দিন দুপুরে সিউড়ির ইদগাহ মাঠ থেকে মিছিলের সূচনা হয়। সারা শহর পরিক্রমা করে মিছিল পৌঁছয় জেলাশাসকের দফতরে সামনে। সেখানে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের সাত জন প্রতিনিধি জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেন। প্রশাসনের কাছে তাঁরা কিছু দাবি রেখেছেন। যেমন, এনপিআর-এ সংগৃহীত তথ্য ভবিষ্যতে এনআরসি-তে ব্যবহৃত হবে না, এনপিআর-এর কারণে ভবিষ্যতে কোনও সাধারণ মানুষ যেন হয়রানি এবং সম্পত্তিহানির সম্মুখীন না হন, সেনসাস বা দশকওয়ারি জনগণনা প্রকল্পের সঙ্গে এনপিআর-এর সম্পর্ক নিয়ে জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে। এ ছাড়াও প্রশ্ন তোলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনায় এনপিআর করা কি সম্ভব?
সংস্কৃতি মঞ্চের বক্তব্য, ১ এপ্রিল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে একতরফা ভাবে এনপিআর-এর কাজ শুরু করা হলে মানুষের কী কর্তব্য, তা নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বিবৃতি দেওয়া দরকার। মঞ্চের সদস্যদের অভিযোগ, সিএএ চালু হওয়ার পর থেকেই নানা ‘স্বার্থান্বেষী মহলের’ পক্ষ থেকে ‘উস্কানিমূলক’ প্রচার চালানো হচ্ছে। ওই কাজ যারা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তোলা হয়েছে।
এ দিনের মিছিলের বেশ কিছু অভিনবত্ব লক্ষ্য করেছেন জেলা সদরের বাসিন্দারা। ওই মঞ্চের কয়েক জন যুব সদস্য মিছিলের ঠিক সামনে হাঁটতে হাঁটতে পথেই ‘নো এনআরসি’ এবং ‘নো সিএএ’ লিখতে লিখতে মিছিলের সঙ্গে সারা শহর পরিক্রমা করেন। এই নিয়ে ওই যুবকদের এক জন আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘আমরা রাস্তায় লেখার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য, ওই কালা কানুন আমরা মানব না, কাগজ আমরা দেখাব না!’’
মিছিলের আর একটি আকর্ষণ ছিল, বিশাল লম্বা জাতীয় পতাকা। সংস্কৃতি মঞ্চের সদস্যদের দাবি, নতুন নাগরিকত্ব আইন সংবিধান-বিরোধী। তাই তাঁরা হাতে সংবিধানের প্রতিলিপি নিয়ে মিছিলে পা মিলিয়েছেন। সংগঠনের সভাপতি সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আজ আবার আমরা শাসকের অনৈতিক নীতির বলে পরাধীন। তাই নতুন এক স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়েছে। আমরা এনআরসি, সিএএ, এনপিআর হতে দেব না। এই দ্বিতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে আমরা ছিনিয়ে আনবই ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতান্ত্রিকতায় মোড়া নাগরিক অধিকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy