—প্রতীকী চিত্র।
এক টানা ভোটের ডিউটি করছেন তিনি। সেই ডিউটিতে স্বামীও। পরিবার, দুই নাবালিকা মেয়ে এবং নিজের হাতে গড়া বৃদ্ধাশ্রমে দেখভাল করতে পারছেন না। ফেসবুক লাইভ করে জেলা পুলিশের আধিকারিকদের একাংশের বিরুদ্ধে ডিউটি দেওয়া নিয়ে অভিযোগ তুলে নিজের হাতে ব্লেড চালালেন বীরভূম জেলা পুলিশের ডিইবি সেকশনে কর্মরত এক মহিলা পুলিশ অফিসার (এএসআই)।
বুধবার বেলা দুটো নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার ইন্দাসে। একগুচ্ছ অভিযোগ শেষে ব্লেড দিয়ে ওই মহিলা পুলিশকর্মীকে তাঁর বাঁ হাতের শিরা কাটতে উদ্যত হতে দেখা যায়। শেষ মুহূর্তে তাঁরই এক সহকর্মী হাত থেকে ব্লেড কেড়ে নিলেও সামান্য জখম হন ওই মহিলা এএসআই। ঘটনার পরেই তাঁকে ইন্দাস ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সুস্থ তিনি। কিন্তু ঘটনার জেরে বীরভূম জেলা পুলিশে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি তাঁর কানে এসেছে। ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রায় ১৬ বছর ধরে পুলিশের চাকরিতে রয়েছেন আদতে মহম্মদবাজারের বাসিন্দা ওই মহিলা পুলিশকর্মী। কনস্টেবল হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। চলতি বছরের প্রথম দিকে পদোন্নতি হয়ে এএসআই হন। তাঁর স্বামীও জেলা পুলিশের এএসআই পদে রয়েছেন।
তবে প্রথম থেকে সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত ওই মহিলা পুলিশকর্মীর আলাদা পরিচিতি রয়েছে বীরভূমে। বর্তমানে সিউড়িতে নিজস্ব উদ্যোগে একটি বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুলেছেন ছবিলা। সেখানে আশ্রয় পেয়েছেন সহায়সম্বলহীন ২৫ জন বৃদ্ধা। এ রকম এক মহিলা পুলিশকর্মীর এমন পদক্ষেপে বিব্রত জেলা পুলিশের কর্তারা।
এ দিন ফেসবুক লাইভে এসে ওই মহিলা পুলিশকর্মী অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে দাবি করেন, একটানা ভোটের ডিউটি করানো হচ্ছে তাঁকে। বীরভূম থেকে হুগলির পরে বাঁকুড়ায় পাঠানো হয়েছে। ভোটের ডিউটিতে আছেন তাঁর স্বামীও। টাকা বা অন্য শর্তে অন্যরা ডিউটি এড়াতে পারলেও তিনি বা তাঁর স্বামী ওই পথে না-হাঁটায় কোনও ছাড় দেওয়া হয়নি বহু অনুরোধেও বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে দুই নাবালিকা কন্যা এবং ক্যানসার আক্রান্ত মা। বৃদ্ধাশ্রমে এত জন অসহায় বৃদ্ধাকে দেখার কেউ নেই। বাঁকড়ার ইন্দাসে ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে জেলা পুলিশ সুপার, ডিএসপি (ডিইবি)-সহ জেলার পুলিশ কর্তাদের মেসেজ করলেও তার জবাব পাইনি।’’ সেই জন্যই এমন পদক্ষেপ করতে বাধ্য হলেন বলে তাঁর দাবি।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই মহিলা পুলিশকর্মীর আর্জি মেনে বুধবার সকালেই সম পদমর্যাদার এক পুলিশ আধিকারিককে ‘রিলিভার’ হিসাবে বাঁকুড়ায় পাঠানো হয়েছে। সে কথা তাঁকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।’’
যদিও সে কথা মানতে নারাজ মহিলা পুলিশকর্মী। ইন্দাস ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘‘সবটাই এখন ধামাচাপা দেবার চেষ্টা হচ্ছে। রিলিভার পাঠালে বুধবার সকালে ইন্দাস থেকে এসে আমি কাজে যোগ দিলাম কী ভাবে। তবে শুনছি রিলিভার আসছেন। তাঁকে দায়িত্ব বুঝিয়ে আমি জেলায় ফিরব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy