অমর্ত্য সেন এবং বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ফাইল ছবি।
জমি-বিতর্কের মধ্যে অমর্ত্য সেনকে সরাসরি নিশানা করেছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। দাবি করেছেন, নোবেলই পাননি অমর্ত্য! তার প্রেক্ষিতে শুক্রবার প্রতিক্রিয়া দিলেন অর্থনীতিবিদ। সাংবাদিকদের মুখে উপাচার্যের কথা শুনে হেসেই ফেললেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ দাবি করেন, অমর্ত্য আদতে নোবেলজয়ী নন। অর্থনীতিবিদই নিজেকে ‘নোবেলজয়ী’ বলে দাবি করে থাকেন। উপাচার্যের ব্যাখ্যা, নোবেল প্রাইজ়ের যে ডিড (উইল) তৈরি হয়েছিল, সেখানে বলা আছে ৫ জনকে নোবেল প্রাইজ় দেওয়া হবে। যে ৫টি বিষয়ে পুরস্কার দেওয়ার কথা আছে, সেগুলি হল— পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা, সাহিত্য আর বিশ্বশান্তি। বিদ্যুৎ বলেন, ‘‘এর বাইরে আর কারও নোবেল পাওয়ার কথা নয়। পরবর্তী কালে সুইডেনের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক এগিয়ে আসে। তাদের দেওয়া অর্থে অর্থনীতিতে একটা পুরস্কার চালু হয়। যার নাম ব্যাঙ্ক অব সুই়ডেন প্রাইজ় ইন ইকনমিক সায়েন্স ইন মেমোরি অব আলফ্রেড নোবেল। সেটাকে নোবেল পুরস্কার বলা যাবে না।’’
বিদ্যুতের এই দাবির প্রেক্ষিতে অমর্ত্য অবশ্য কিছুই বলতে চাননি। উপাচার্যের মন্তব্য তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হলে হাসতে হাসতে নোবেলজয়ী বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমার কিছুই বলার নেই।’’
উপাচার্য যে দাবি করেছেন, তা অবশ্য আজকের নয়। বহু পুরনো। আগেই অনেকে এই দাবিকে ‘বিভ্রান্তিকর এবং অসত্য’ বলে খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, নোবেল পুরস্কার কমিটির ওয়েবসাইটে নোবেলজয়ীদের তালিকাতেই অমর্ত্যের নাম জ্বলজ্বল করছে। শুধু তা-ই নয়, যে যে বিষয়ে পুরস্কার দেওয়া হয়, সেই তালিকাতেও ‘অর্থনীতি’ রয়েছে। ১৯৬৮ সালে সুই়ডেনের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক পুরস্কারটি চালু করেছে ঠিকই। কিন্তু নোবেল কমিটি যেখানে অমর্ত্যকে নোবেলজয়ী হিসাবেই চিহ্নিত করেছে, তাই সেখানে অন্য কোনও যুক্তি বা তর্কের অবকাশ নেই!
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অমর্ত্যের শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র ঠিকানায় চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, দখল করে থাকা ১৩ ডেসিম্যাল জমি অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে। বৃহস্পতিবার রাতে উপাচার্য বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিম্যাল জমি দখল করে রয়েছেন অমর্ত্য। উনি আদালতে যাচ্ছেন না, কারণ গেলেই হেরে যাবেন।’’ অমর্ত্যকে বিষয়টি আপসে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শও দেন বিদ্যুৎ।
তার প্রেক্ষিতে শুক্রবার অমর্ত্য বলেন, ‘‘লিজ়ের বাইরেও আমার বাবা কিছু জমি কিনেছিলেন। তার বাইরে আর কোনও জমি কেনা হয়নি। উনি কোন জমির তথ্য দিচ্ছেন, তা জানার আগ্রহ রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy