ক্ষতিগ্রস্ত: এই গাড়িতেই ছিল স্কুলের পড়ুয়ারা। ট্রাকের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাড়িটি। নিজস্ব চিত্র
স্কুলের গাড়িতে ফের দুর্ঘটনা। মুরারইয়ের পরে এ বার সিউড়ি। বৃহস্পতিবার চলন্ত স্কুলবাসের পাটাতন খুলে পড়ে গিয়ে আহত হয় মুরারইয়ের এক ছাত্রী। তার পরের দিনই পড়ুয়াদের স্কুলগাড়িতে ধাক্কা মারল একটি লরি। তা-ও জেলা সদরে এবং লেন ভেঙে। এই ঘটনায় কেউ আহত না হলেও পুলকারের সঙ্গে ঘটে চলা একের পর এক ঘটনা অবিভাবকদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলছে। যদিও এ দিনের ঘটনার জন্য বেহাল রাস্তা এবং বেপরোয়া লরি ও ডাম্পার চলাচলকেই দায়ী করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে আব্দারপুর রেল ক্রসিংয়ের কাছেই, সিউড়ি-দুবরাজপুর রাস্তায় রয়েছে সিবিএসই বোর্ডের অনুমোদিত একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। প্রায় ১২০০ জন ছাত্রছাত্রী পড়ে ওই স্কুলে। তাদের মধ্যে অনেকেই রোজ স্কুলগাড়িতে করে যাতায়াত করে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন হাটজনবাজার ও পুরন্দরপুর এলাকা থেকে ৬-৭ জন পড়ুয়া স্কুলের বড় গাড়িতে যাতায়াত করে। তবে এ দিন যে গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, সেটি ব্যক্তিগত গাড়ি। স্কুলের বিশেষ কিছু কাজে ওই গাড়িটি ব্যবহার করা হয়। ছাত্রদের নিয়ে আসা বা যাওয়ার কাজে ওই গাড়িটি করে না। এ দিন কেন তাহলে সেই গাড়িটি ব্যবহার করা হল? স্কুলে কর্তৃপক্ষের তরফে উৎপল সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘স্কুলের যে গাড়িতে ওই বাচ্চাদের নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেটি ওয়ার্কশপ থেকে আসতে দেরি করেছি। বাচ্চারা বাড়ি ফেরার জন্য অধৈর্য হয়ে উঠেছিল। সে জন্যই ব্যক্তিগত গাড়িটি ব্যবহার করা হয়েছিল।’’
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার আন্তজার্তিক ভাষা দিবস উপলক্ষে স্কুলে অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠান শেষে ওই স্কুলগাড়িটি ৫-৬ জন পড়ুয়াকে নিয়ে ওই গাড়িটি হাটজনবাজার হয়ে পুরন্দরপুর যাওয়ার জন্য রওনা হয়। সিউড়ি-দুবরাজপুর রাস্তায় হাটজনবাজার বাইপাসের কাছে ওই গাড়িটিকে একটি লরি ভুল দিক থেকে এসে ধাক্কা মারে। বড় কিছু না হলেও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে পড়ুয়ারা। গাড়িটির এক পাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে অন্য একটি গাড়িতে পড়ুয়াদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। লরিটি পালিয়ে যায়।
গাড়িতে থাকা স্কুলের ক্লাস ওয়ানের এক পড়ুয়া বলে, ‘‘আমাদের গাড়ি ওই রাস্তায় ওঠামাত্রই উল্টো দিক থেকে আসা একটি বড় গাড়ি ধাক্কা মারে। আমরা সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।’’ এক অবিভাবক বুল্টি ভাণ্ডারী বলেন, ‘‘বাচ্চাদের আসতে দেরি হতে দেখে আমি স্কুলে ফোন করি। তখনই জানতে পারি যে স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েছে। বাচ্চাদের না দেখা পর্যন্ত মানসিক ভাবে শান্তি পাচ্ছিলাম না। যখন ওরা বাড়ি ফিরল, ওদের সুস্থ দেখে শান্তি হল। কিন্তু বাচ্চারা ভয় পেয়েছিল।’’
অবিভাকদের দাবি, ওই রাস্তা এমনিতেই খারাপ, গাড়িও বেপরোয়া ভাবে যাতায়াত করে। যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই স্কুলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করে আসেন সিউড়ি থানার পুলিশ অফিসারেরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার প্রেক্ষিতে এ দিন বিকেল পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষেরও দাবি, স্কুলের সামনের রাস্তা সংস্কারের আর্জি তাঁরা স্থানীয় পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ ও প্রশাসনের কাছে একাধিক বার জানিয়েছেন। কিন্তু, কোনও সুরাহা হয়নি। উৎপলবাবু বলেন, ‘‘ভুল দিক থেকে এসে লরিটি ধাক্কা মারে আমাদের গাড়িতে। রাস্তা খারাপ হওয়ায় লরিটির গতি কম ছিল। আরও দ্রুত গতিতে থাকলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy