দোলেনা মণ্ডল। বিষ্ণুপুরের মড়ার গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় নাম রয়েছে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আমপানের চার মাস পরেও বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের মড়ার গ্রামের দু’টি পরিবার সরকারি কোনও সাহায্য পায়নি বলে অভিযোগ। কোথায় সমস্যা, তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে ব্লক প্রশাসন। মড়ার গ্রামের উত্তরপাড়ার বৃদ্ধা দোলেনা মণ্ডলের স্বামীর মৃত্যু হয় ২০১৩ সালে। দুই ছেলের সংসার আলদা। বছর বাষট্টির দোলেনাবিবি একাই থাকেন বাড়িতে। কয়েকটি গরু রয়েছে। দুধ বিক্রি করে অল্প কিছু আয় হয়। গত ২০ মে দোলেনা বিবির মাটির বাড়ি তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে ঘুর্ণিঝড় আমপান। আবেদন করে সরকারি ক্ষতিপূরণের তালিকায় নাম ওঠায় গোড়ায় আশ্বস্ত হয়েছিলেন। কিন্তু অন্য অনেকে কিছু দিনের মধ্যেই ক্ষতিপূরণ পেয়ে গেলেও তিনি পাননি এখনও।
দোলেনা বিবি বলেন, ‘‘ভাঙা ঘর সারাই না করায় পুরো ধসে যাচ্ছে। তার মধ্যেই কোনও রকমে মাথা গুঁজে আছি। বর্ষার রাতে ছেলেদের উঠোনের এক কোণে জড়সড় হয়ে থাকতে হয়।’’ বৃদ্ধার ছেলে আবদুল কাদের মণ্ডল বলেন, ‘‘দু’বিঘা জমিতে আনাজ চাষ করে করে কোনও রকমে সংসার চলে আমার। কাজ ফেলে, পয়সা খরচ করে খালি মড়ার পঞ্চায়েত আর বিষ্ণুপুর ব্লক অফিসে চক্কর কেটেছি। কিন্তু হয়রানিই সার। মায়ের ভাঙা বাড়ি সারাইয়ের টাকা মেলেনি।’’ ওই বৃদ্ধার পড়শি রিনা খানও একই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘টিনের চালের এমন দশা, বৃষ্টির সময়ে ঘরের ভিতরে ছাতা নিয়ে বসে থাকতে হয়।’’ রিনার স্বামী রজব আলি খান পরিযায়ী শ্রমিক। লকডাউন পর্বে কাজ হারিয়ে এখন ঘরে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘দিনমজুরিও সব সময় মেলে না। সংসার চালাতে হিমসিম অবস্থা। এরই মধ্যে কাজের খোঁজ ছেড়ে প্রায় দিন সাত কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে পঞ্চায়েত আর ব্লকে গিয়ে হত্যে দিতে হচ্ছে।’’ দু’টি পরিবারেই অভিযোগ, লিখিত ভাবে ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি।
মড়ার পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের অরুণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবার টাকা পেয়ে গিয়েছে বলে শুনেছিলাম। কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ বিডিও (বিষ্ণুপুর) স্নেহাশিস দত্ত জানান, সরকারি সাহায্যের তালিকায় মড়ার পঞ্চায়েতের আমপান-বিপর্যস্ত ৬ জনের নাম রয়েছে। তাঁর দাবি, নথি অনুযায়ী সবার টাকা ট্রেজারি থেক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে গিয়েছে। বিডিও বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের যে তালিকা পেয়েছিলাম, তাতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কোনও গোলমাল থাকতে পারে। পঞ্চায়েত প্রধানকে বলছি। ক্ষতিগ্রস্ত এবং ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে দ্রুত সমাধান করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy