ফুটন্ত ঘিয়ের মধ্যে হাত ডুবিয়ে তৈরি করা হচ্ছে গুড়পিঠে। নিজস্ব চিত্র
সাত ভাইয়ের কল্যাণে দীর্ঘ দিন সাধনা করেছিল বোন। সে জন্য হিংস্র জন্তুর মুখ থেকেও ফিরে এসেছিল সাত ভাই। এই কাহিনিকে স্মরণ করেই উৎসবে মাতলেন বাঁকুড়ার তালডাংরা ব্লকের পাকুড়ডিহার বাসিন্দারা। যার পোশাকি নাম ‘সাত ভায়া মিট্টাং মেশ্রা’।
জনশ্রুতি, প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে বাঁকুড়ার জঙ্গলঘেরা পাকুড়ডিহা গ্রামে বসবাস করত সাত ভাই এবং তাঁদের এক বোন। তাঁদের পেশা ছিল জঙ্গলের পশু শিকার। কথিত আছে, এক দিন পশু শিকারে গিয়ে আর ফিরে আসেননি সাত ভাই। গ্রামের অন্যান্যদের মুখে এক মাত্র বোন সেই খবর পান। এর পর ভাইদের মঙ্গলকামনায় সাধনা শুরু করেন বোন। কথিত আছে, বহু দিন পর সাত ভাই অক্ষত অবস্থায় বাড়িতে ফেরেন। সেই ঘটনাকে স্মরণ করেই প্রতি বছর উৎসবে মাতেন পাকুড়ডিহার বাসিন্দারা।
মাঠে গাছের ডাল পুঁতে তা প্রকৃতি হিসাবে কল্পনা করে পুজো করা হয়। ফুটন্ত ঘিয়ের মধ্যে হাত ডুবিয়ে গুড়পিঠে তৈরি করা হয়। তার পর সেই পিঠে পুজোর ভোগ হিসাবে নিবেদন করা হয়। পাকুড়ডিহার বাসিন্দা চুনারাম মান্ডি বললেন, ‘‘আজ থেকে সাড়ে তিনশো বছর আগে যে বোন নিজের জীবন বিপন্ন করে ভাইদের জীবন ফিরিয়ে এনেছিল সেই বোন আসলে প্রকৃতিরই আর এক রূপ। আমরা সেই আত্মত্যাগী বোনকে স্মরণ করে এই উৎসবের মাধ্যমে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তের প্রত্যেক বোনকে সম্মান জানাই।’’
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাকুড়ডিহা গ্রামের এই উৎসবের কথা ছড়িয়ে পড়েছে দূরদূরান্তে। ফি বছর অসংখ্য মানুষ এই উৎসব দেখতে হাজির হন গ্রামে। তালডাংরা থেকে পাকুড়ডিহার এই উৎসব দেখতে এসেছিলেন আস্তিক চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এক বোনের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে বিশ্বের আর কোথাও এমন উৎসব হয় কি না আমার জানা নেই। সে দিক থেকে দেখলে এই উৎসব ব্যতিক্রমী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy