Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু, ভাঙচুর

দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় শুক্রবার তিন জনের মৃত্যু হল পুরুলিয়া জেলার দুই প্রান্তে। আহত হয়েছেন পাঁচ জন।

অবরোধ: রেনি রোডে। নিজস্ব চিত্র

অবরোধ: রেনি রোডে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১১
Share: Save:

দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় শুক্রবার তিন জনের মৃত্যু হল পুরুলিয়া জেলার দুই প্রান্তে। আহত হয়েছেন পাঁচ জন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম সমীর মাহাতো (৩৯), জাগরণ কর্মকার (৪৪)। তাঁদের বাড়ি পুরুলিয়া মফস্‌সল থানার যথাক্রমে দুবচড়কা ও ভাগাবাঁধ গ্রামে। অন্যজন স্কুল ছাত্র সন্দীপ পরামানিকের (১৯) বাড়ি পুরুলিয়া শহরের রেনি রোডে। পুরুলিয়া সদর থানা এলাকায় দুর্ঘটনার জেরে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০ এ) জাতীয় সড়কে ঘণ্টা দুয়েক অবরোধ হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দুর্ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বাঘমুণ্ডি-বলরামপুর সড়কে, বলরামপুর থানার হরিপালডি গ্রামের অদূরে। একটি যাত্রিবাহী বাস বাঘমুণ্ডির দিক থেকে বলরামপুরমুখী যাচ্ছিল। উল্টোদিক থেকে একটি গাড়ি আসছিল। হরিপালডি গ্রামের অদূরে হঠাৎ দু’টি গাড়ির মুখোমুখি ধাক্কা হয়। সংঘর্ষে ছোট গাড়িটি রাস্তা থেকে ছিটকে গিয়ে কয়েকবার পাল্টি খায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে সমীর মাহাতো ও জাগরণ কর্মকারকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। গাড়িতে আরও কয়েকজন যাত্রী ছিলেন। তাঁদেরও চোট লাগে। আহতদের ঝাড়খণ্ডের টাটানগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, এই গাড়িটি বাঘমুণ্ডির দিকে কোন একটি হাটে যাচ্ছিল। বাসেরও কয়েকজন যাত্রী অল্পবিস্তর চোট পান। ছোট গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। ওই গাড়ি ও বাস আটক করেছে পুলিশ। ট্যাঙ্কারের চালক পালিয়েছে।

অন্যদিকে, এ দিনই সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ পুরুলিয়া-বাঁকুড়া জাতীয় সড়কে পুরুলিয়া সদর থানার রেনি রোডে গ্যাসবাহী ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক স্কুল ছাত্রের। জানা গিয়েছে রেনি রোডের দেবী মেলা এলাকার বাসিন্দা সন্দীপ এ দিন সেই সময় টিউশন নিতে যাচ্ছিল। সে হুড়ার লক্ষ্মণপুর হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। বাড়ি থেকে বার হয়ে সাইকেলে এই রাস্তা ধরে সে জলট্যাঙ্ক মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় একটি ট্যাঙ্কার জলট্যাঙ্কি মোড়ের দিকে যাচ্ছিল। কোনও ভাবে ট্যাঙ্কারটির সঙ্গে এই ছাত্রের ধাক্কা লাগে।

তবে ঠিক কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা জানাতে পারেনি পুলিশ। রাস্তায় ছাত্রটির দেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন ওই সড়কে অবরোধ শুরু করেন। ট্যাঙ্কারটিকে তাড়া করে ধরে ফেলা হয়। ভাঙচুরও চালানো হয়। জেলা পুলিশের এক কর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, ট্যাঙ্কারে এলপিজি ছিল। কিছু লোক এই গাড়িটিতে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময় গাড়িটি রাস্তার পাশে একটি স্কুলের অদূরে দাঁড়িয়েছিল। কোনও ভাবে ট্যাঙ্কারটিতে আগুন ধরে গেলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ক্ষুব্ধ লোকজনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। না হলে বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারত।’’

ট্যাঙ্কারটিকে যেখানে আটকানো হয় এবং যেখানে ওই ছাত্রের বাড়ি দু’জায়গাতেই অবরোধ শুরু হয়। তাঁরা দাবি করেন, এই রাস্তায় নিয়ন্ত্রিত যান চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। মৃত ছাত্রের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, নিয়মিত পুলিশের টহল-সহ আরও কয়েক দফা দাবিতে অবরোধ চলতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি তোলেন, ফুটপাথ ঘেঁষে রাস্তার দিকে রেলিং লাগাতে হবে। ভারী গাড়ি যাতে শহরের ব্যস্ত রাস্তা এড়িয়ে যেতে পারে, সে জন্য শহরে ঢোকার আগেই সেগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়ারও দাবি উঠেছে। দুর্ঘটনার পরেই এই রাস্তায় পুলিশ গার্ডরেল বসিয়ে দেয়। ঘণ্টা দুয়েক পরে অবরোধ তোলে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Calamities Bridge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE