হত্যালীলা: রাস্তায় পড়ে রয়েছে মোসারফের দেহ। ইনসেটে নিহত তৃণমূল কর্মী। নিজস্ব চিত্র।
দিনের বেলা দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম মোসারফ হোসেন ওরফে বাবুল (৫৭)। শনিবার সকালে রামপুরহাট দুনিগ্রাম সড়কের উপর জয়কৃষ্ণপুর গ্রাম লাগোয়া একটি কালভার্টের কাছে ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোটরবাইকে চেপে যাওয়ার সময় তিন দুষ্কৃতী পথ আটকায় মোসারফের। দুটি বোমা ছোড়া হয় তাঁকে লক্ষ্য করে। প্রথমটি মোটরবাইকের সামনে ফাটায় রাস্তার উপরে ছিটকে পড়েন তিনি। দ্বিতীয় বোমাটি তাঁর মাথার উপরে ফাটানো হয়। রক্তে ভেসে যায় গোটা রাস্তা। রামপুরহাট থানার দখলবাটি গ্রামের বাসিন্দা মোসারফের বাবা হানিফ খান তৃণমূল পরিচালিত স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান। ঠিকাদারির কাজ করতেন মোসারফ।
বীরভূম জেলা তৃণমূলের নেতাদের দাবি, বাবুল তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তৃণমূলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি থাকতেন। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অবশ্য এ এই ঘটনার পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দের অভিযোগ করা হয়েছে। মোসারফের স্ত্রী মনোয়ারা বিবি সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ওই গ্রামেরই এক তৃণমূল কর্মী ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, মোসারফকে মারার পরে তাঁর বাড়ির চারপাশেও বোমাবাজি চলে। দুপুরের পরে গ্রামে পুলিশ পিকেট বসে। মনোয়ারা বলেন, ‘‘এলাকায় দুষ্কৃতীদের উৎপাত বাড়ছিল এলাকারই তৃণমূলের কর্মী ও তাঁর সঙ্গীদের মদতে। আমার স্বামী এর প্রতিবাদ করায় তাঁকে মেরে ফেলা হল। সকাল আটটায় বাজারে গিয়েছিল। বেলা হয়ে গেলেও বাড়ি ফিরছিল না। ১২টা নাগাদ খবর পেলাম ওঁকে বোমা মারা হয়েছে। আমাদের ভয় দেখাতে বাড়ির চারপাশে বোমা ফাটানো হয়।’’ এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, দলেরই কয়েকজনের সঙ্গে বিবাদ থাকায় গ্রামের মধ্যে মোসারফকে খুব একটা বেরোতে দেখা যেত না ইদানীং। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দের কথা সরাসরি মানতে চাননি তৃণমূলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতে দখলবাটি গ্রামে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতেও ছিল মোসারফ। এলাকায় বিজেপি সংগঠন করার চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক কারণে বিজেপিই এই ঘটনা ঘটিয়েছে মনে হচ্ছে। আমরা চাই পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করুক। প্রকাশ্যে এই নৃশংস খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করুক।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি খুন হয়েছেন তিনি এলাকায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের অপকর্মের প্রতিবাদ করতেন। যে কারণে তাঁকে তৃণমূলের লোকেরাই খুন করেছে।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy