হাতির হানায় জখম হল এক স্কুল ছাত্র। সোমবার বিষ্ণুপুর থানার বাঁকাদহ রেঞ্জের, বেলশুলিয়া পঞ্চায়েত এলাকার শঙ্করলায়েকডাঙা গ্রামের ঘটনা। জখম তরুণ সাবিরুল মল্লিক স্থানীয় বকডহরা হাইমাদ্রাসার একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
দিন কয়েক আগেই পশ্চিম মেদিনীপুর-বাঁকুড়া সীমান্তে অবস্থান করার সময় দলমার হাতির পালের হামলায় গড়বেতা থানা এলাকার এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সোমবার ভোরে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর-পাঞ্চেত এলাকায় ঢুকে পড়া সেই হাতির দল ফের হামলা চালাল। এ দিন সকালে বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে সাবিরুলকে।
বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে বসে ওই তরুণ বলে, ‘‘ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ দরজা খুলে বেরিয়েই দেখি অনেক হাতি ঘোরাঘুরি করছে। ফেরার আগেই একটা দাঁতাল আমাকে শুঁড়ে তুলে ফেলে।’’
সাবিরুলের মা হোসেনা মল্লিক দাদা নরুল ইসলাম মল্লিক ও বউদি সুরজিনা মল্লিক বলেন, ‘‘চিৎকার শুনে আমরা সবাই বেরিয়ে আসি। দেখি প্রায় চল্লিশটা হাতি। পড়শিরা হুলা জ্বালিয়ে, পটকা ফাটিয়ে সেগুলোকে খেদাই। এক সঙ্গে এতগুলো হাতি আগে এলাকায় দেখিনি। কম করে চল্লিশটা হবে।’’ তাঁরা জানান, বনকর্মীদের সাহায্যে সাবিরুলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের সুপার পৃথ্বীশ আকুলি বলেন, ‘‘ছেলেটির বুকে, পিঠে, ঘাড়ে এবং হাতে আঘাত রয়েছে। এক্স-রে পরীক্ষা করানো হয়েছে। চিকিৎসায় ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।’’
হাসপাতালে ছেলের পাশে বসে জখম ছাত্রের বলেন, ‘ভাগ্যিস ওর কান্নাকাটি শুনে আমরা জেগে উঠেছিলাম। নইলে কী যে হত ভেবে পাচ্ছিনা। এক সঙ্গে এতো হাতি আমাদের গ্রামে কখনো দেখিনি’। হাতিগুলি গ্রামের আলু চাষের জমির ব্যাপক ক্ষতি করেছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বন বিভাগের ডিএফও নীলরতন পাণ্ডা জানান, রবিবার ভোরে ৪১টি হাতি ওই এলাকায় ঢুকেছে। দিন কয়েক আগেই ওই দলের আরও তিনটি হাতি ঢুকে পড়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘এতগুলো হাতি সামলাতে আমরা হিমসিম খাচ্ছি।’’ সাবিরুলের চিকিৎসার দায়িত্ব বনদফতর নিয়েছে বলে তিনি জানান। ডিএফও বলেন, ‘‘হাতির দলের উপরে নজরদারি রয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’