চর্চায় থাকা বাড়িগুলির মধ্যে একটি। শনিবার শান্তিনিকেতনের ফুলডাঙায়। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
সবাই বলে মন্ত্রীর বাড়ি। পড়শিরাও তাই জানাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, মন্ত্রীর আসা যাওয়াও নাকি ছিল সন্ধ্যার পরে। আবার সকাল হওয়ার আগেই চলে যেতেন তিনি। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এসএসসি দুর্নীতির অভিযোগে প্রায় ২৭ ঘণ্টা জেরার পরে শনিবার সকালে কলকাতায় তাঁর নাকতলার বাড়ি থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গ্রেফতার করেছে। তার আগে রাতভর তল্লাশিতে পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে মিলেছে কোটি কোটি নগদ টাকা।
আর এই ঘটনার পরেই শান্তিনিকেতনের সঙ্গে পার্থবাবুর সংযোগের কথাও উঠে আসছে ইডি সূত্রে। সেই সূত্রেই শনিবার দিনভর চর্চায় থেকেছে শান্তিনিকেতনের ফুলডাঙা, প্রান্তিক, সোনাঝুরি, অ্যান্ড্রুজ পল্লি এলাকায় থাকা সাতটি সুদৃশ্য বাড়ি। যে বাড়িগুলিতে নাকি পার্থের যাতায়াত ছিল বলেই স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে। সেই বাড়িগুলি মন্ত্রীরই কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি। তবে স্থানীয়দের দাবি, ওই বাড়িগুলি দেখভাল করতেন এক মহিলা, যিনি পেশায় অধ্যাপিকা। এখানে যাতায়াত ছিল তাঁরও। তেমনই একটি বাড়ির কেয়ারটেকার বললেন, ‘‘আমরা তো বেতনভুক কর্মচারী। বেশি কিছু বলতে পারব না। তবে, পার্থবাবু মাঝেমধ্যেই আসতেন। এখানকার বাড়িগুলিতে রাত কাটিয়ে ফিরে যেতেন কলকাতা।’’ শান্তিনিকেতনে হামেশাই যে যাতায়াত ছিল তৃণমূলের মহাসচিবের, তা অবশ্য ওই বাড়িগুলি যে এলাকায়, সেখানকার বাসিন্দারাও জানিয়েছেন।
এ দিন সকালে বোলপুর শান্তিনিকেতন এলাকায় পার্থবাবুর বাড়ি বলে পরিচিত বিশাল জায়গা নিয়ে উঁচু পাঁচিল ঘেরা বাংলোগুলির সামনে গিয়ে দেখা যায় ভিতর থেকে গেট বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরে একমাত্র ফুলডাঙার বাংলো বাড়িটির কেয়ারটেকার বেরিয়ে এসে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। প্রতিবেশীদের অনেকেই বলেন, ‘‘পার্থবাবু মাঝেমধ্যেই আসতেন এই বাড়িতে। তবে বেশিরভাগ সময়ই তিনি রাতে এসে সকালে ফিরে যেতেন। প্রচুর পুলিশি নিরাপত্তা ও গাড়ি দেখে আমরা আঁচ করতে পারতাম উনি এসেছেন।’’ প্রতিবেশীদের বক্তব্য অনুযায়ী, অর্পিতাও শান্তিনিকেতন ও বোলপুরের জামবুনির বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “এতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। দুর্নীতি করেই আজ উনি এই জায়গায় পৌঁছেছেন। আমরাও চাই বোলপুর শান্তিনিকেতন এলাকায় ওঁর যত বাড়ি, সম্পত্তি রয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক।” বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অষ্টম মণ্ডল বলেন, “এই সবই সাধারণ মানুষের টাকায় তৈরি। তাই আমরা চাই এই সমস্ত কিছুর তদন্ত হোক।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতাও মানছেন, শান্তিনিকেতনে পার্থের বাড়ি আছে বলে তিনি শুনেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘শুনেছি, মন্ত্রী মাঝেমধ্যে আসতেনও সেখানে। কিন্তু তার ঠিক কতগুলো বাড়ি রয়েছে, তা আমার জানা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy