লাদুনিয়ার জঙ্গলে হাতির পাল। নিজস্ব চিত্র
বন দফতরের চিন্তা বাড়িয়ে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ল বর্ধমান থেকে বাঁকুড়ায় প্রবেশ করা হাতির দল। বৃহস্পতিবার রাতে মোট ৫৬টি হাতির একটি দল দামোদর নদ পেরিয়ে পুর্ব বর্ধমান থেকে বাঁকুড়ায় ঢুকে পড়ে। এর পর ওই দলটি মোট তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ৪০টি হাতির একটি দল ফের সোনামুখী হয়ে পৌঁছয় বেলিয়াতোড় রেঞ্জের লাদুনিয়ার জঙ্গলে। বাকি ১৬টি হাতির মধ্যে ১৫টি সোনামুখী রেঞ্জের ভুলাপাথরার জঙ্গলে এবং একটি হাতি সোনামুখী রেঞ্জের তেঁতুলবাঁধ জঙ্গলে আপাতত আস্তানা গেড়েছে। ধান তোলা এবং আলু চাষের এই মরসুমে হাতির দলটি তিন ভাগে ভেঙে যাওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন কৃষক থেকে বনকর্মী সকলেই।
পুজোর ঠিক আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমানা পেরিয়ে প্রায় ৮০ টি হাতির দল ঢুকে পড়ে বাঁকুড়া জেলায়। এর মধ্যে ৫৬টি হাতির একটি দল খাবারের খোঁজে দ্বারকেশ্বর নদ পেরিয়ে সোনামুখী হয়ে বেলিয়াতোড় এবং বড়জোড়া রেঞ্জে ঢুকে পড়ে। বন দফতরের তাড়ায় হাতির ওই দলটি দামোদর পেরিয়ে পুর্ব বর্ধমানে ঢুকে পড়ে। এর পর বৃহস্পতিবার রাতে হাতির দলটিকে ফের বাঁকুড়ায় ফেরত পাঠায় পুর্ব বর্ধমান জেলার বন দফতর। কিন্তু বাঁকুড়ায় প্রবেশের পর হাতির দলটিকে বাধা পেতে হয় পাত্রসায়র ব্লকের বিভিন্ন জায়গায়। ওই এলাকার কৃষকরা আমন ধানে বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কায় হাতির দলটিকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আর তাতেই হাতির দলটি ভাগ হয়ে যায় তিনটি ভাগে।
বাঁকুড়া জেলায় আমন ধান কাটা প্রায় শেষের মুখে। সবে শুরু হয়েছে আলু চাষ। এই সময়ে ফসলের বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। ক্ষতি এড়িয়ে হাতিগুলিকে নিরাপদে পশ্চিম মেদিনীপুরে ফিরিয়ে দেওয়াই এখন চ্যালেঞ্জ বন দফতরের কাছে। বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের ডিএফও কল্যাণ রাই বলে, ‘‘আলু চাষ এখনও সে ভাবে শুরু হয়নি বাঁকুড়ায়। তার আগেই আমরা ৫৬ টি হাতিকে একসঙ্গে বার করে দিতে চাইছি। কিন্তু হাতির দলটি ভাগ হয়ে যাওয়ায় সমস্যা বেড়েছে। এখন তিনটি দলকে একসঙ্গে করে তবেই আমরা কেন্দ্রীয় ভাবে হাতি খেদানোর কাজ শুরু করতে পারব। তিনটি দলকে একসঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ কাজ নয়। আমরা সবরকম ভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি।’’
গজরাজের আগমনে আশঙ্কায় কৃষকরাও। বৃন্দাবনপুর গ্রামের কৃষক সুভাষ তুং যেমন বলেন, ‘‘বৃষ্টির জেরে এবং হারভেস্টার যন্ত্রের অভাবে আমাদের এলাকায় বহু জমির ধান এখনও মাঠেই রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে আলু চাষের মরসুমেও দেরি হয়ে যাচ্ছে। এর মাঝেই হাতির দল এলাকায় ফিরে আসায় আমাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। বন দফতরের সঠিক পরিকল্পনার অভাবেই আমাদের এই পরিণতি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy