Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Rakhi

Rakhi: বছরভর তৈরি করেন রাখি, অভিনব পরম্পরা বয়ে যায় বাঁকুড়ার পোদ্দার বাড়ির আট থেকে আশিতে

নেশার টানেই গত ষোলো বছর ধরে ফেলে দেওয়া সামগ্রী থেকে রাখি তৈরি করছেন পোদ্দার পরিবারের সদস্যরা।

রাখি তৈরিতে ব্যস্ত পোদ্দার পরিবারের সদস্যরা।

রাখি তৈরিতে ব্যস্ত পোদ্দার পরিবারের সদস্যরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২১ ০৯:৩৮
Share: Save:

পেশায় ব্যবসায়ী। নেশা কী? বাঁকুড়ার কুচকুচিয়া এলাকার পোদ্দার বাড়ির কর্তার জবাব, ‘‘বছরভর রাখি তৈরি করি।’’ পোদ্দার বাড়ির কর্তাই শুধু নন, তাঁর পরিবারের তিন প্রজন্মেরই একই নেশা। সে নেশার টানেই গত ষোলো বছর ধরে ফেলে দেওয়া সামগ্রী থেকে রাখি তৈরি করছেন পোদ্দার পরিবারের সদস্যরা।

রবিবার রাখি উৎসব। তার আগের দিন পোদ্দার পরিবারের কারও যেন দম ফেলবার ফুরসত নেই। শেষবেলায় হাজার হাজার রাখিতে চলে ‘ফিনিশিং টাচ’। গত ষোলো বছর ধরে এমনটাই হয়ে আসছে। তবে কুচকুচিয়া এলাকার রাখি উৎসবকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে পোদ্দার পরিবার। পোদ্দার পরিবারের কর্তা বছর ষাটেকের দুর্গাপ্রসাদ পোদ্দার থেকে শুরু করে নাতনি দীপশিখা পোদ্দার— সকলেই রাখি উৎসবকে কেন্দ্র করে সমকালীন নানা বিষয়ে সচেতনা প্রসার করেন।

বছরভর ফেলে দেওয়া রঙ্গিন প্লাস্টিক, কলমের ঢাকা, নেল পালিশের শিশি, স্কেচ পেনের ভিতরের অংশ দিয়ে রাখি তৈরি করে পোদ্দার পরিবার। রাখি উৎসবের জন্য সেগুলি রেখে দেওয়া হয়। রাখি পুর্ণিমার দিন পোদ্দার পরিবারের সকলে মিলে তাঁদের তৈরি রাখি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বাঁকুড়া শহরের রাস্তায়। পথচলতি মানুষের হাতে তা বেঁধে দেন তাঁরা।

—নিজস্ব চিত্র।

এর শুরুটা হয়েছিল ষোলো বছর আগে। সে সময় অনুশীলন সমিতির বাঁকুড়া শাখা রাখি উৎসবের আয়োজন করেছিল। ওই উৎসবে রাখি সরবরাহের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সমিতির অন্যতম সদস্য দেবকীনন্দন পোদ্দার। নিজের হাতে তৈরি করা রাখি অন্যদের পরানোর আনন্দই যেন নেশার মতো পেয়ে বসে দেবকীনন্দনকে। সে নেশা ছড়িয়ে পড়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও । ২০১৮ সালে দেবকীনন্দনের মৃত্যুর পরেও থেমে যায়নি সে পরম্পরা।

কখনও সরকারি প্রকল্প, কখনও বা করোনা সচেতনতা— প্রতি বছরই বদলে যায় রাখির থিম। দেবকীনন্দনের বড় ছেলে দুর্গাপ্রসাদ বলেন, ‘‘এ উৎসবে হিন্দু, মুসলিম, শিখ নির্বিশেষে পথচলতি মানুষের হাতে রাখি বেঁধে যে আনন্দ হয় তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। পাশাপাশি, মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি।’’

দাদুর চালু করা পারিবারিক রীতি মেনে চলছেন তাঁর নাতি-নাতনিরাও। নাতনি দীপশিখা বলেন, ‘‘খুব ছোট থেকেই পরিবারে এ রীতি দেখে আসছি। দাদুর চালু করা এই রীতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বয়ে নিয়ে যেতে চাই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Rakhi rakhi purnima bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE