১২০ ফুট উঁচু মোবাইল টাওয়ারের মাথায় উঠে বসে আছেন এক যুবক। —নিজস্ব চিত্র।
স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে মত্ত স্বামী সোজা উঠে পড়লেন ১২০ ফুট উঁচু মোবাইল টাওয়ারের মাথায়। সেখানেই বসে থাকলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার ইন্দাস ব্লকের পাত্রগাতি গ্রামে। জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীদের হাজার অনুরোধও কাজে দেয়নি। রাগে ঠায় মোবাইল টাওয়ারের মাথাতেই বসে ছিলেন বছর আঠাশের ওই যুবক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। কিন্তু তা-ও নামিয়ে আনা যায়নি যুবককে। শেষ পর্যন্ত খবর দিতে হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় ক্ষেতমজুর সীমন্ত মাঝি মাঝেমধ্যেই মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফেরেন। স্ত্রী মিঠু মাঝি প্রতিবাদ করলেই তাঁদের মধ্যে শুরু হয় ঝগড়া। তবে শনিবার সীমন্তের সঙ্গে মিঠুর ঝগড়ার কারণ ছিল অন্য। মিঠু জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরে স্বামী বাড়ি ফেরার সময় মিঠু গ্রামে এক সাপুড়ের কাছে সাপ খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। সাপুড়ে তাঁকে বিভিন্ন দোষ কাটাতে কবচ-মাদুলি পরার নিদান দেন। কবচ-মাদুলির প্রতি স্ত্রীর আগ্রহের কথা জানতে পেরে ঝগড়া শুরু করেন সীমন্ত। তিনি সাপুড়েকেও গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। এমনকি, তা নিয়ে গ্রামের একাংশের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়েও পড়েন সীমন্ত। মিঠুর দাবি, এর পরেই সীমন্ত ছুটে গিয়ে গ্রামের এক প্রান্তে থাকা ১২০ ফুট উঁচু একটি মোবাইল টাওয়ারের উপর উঠতে শুরু করেন। গ্রামবাসীরা সীমন্তকে বারবার নেমে আসতে বললেও তিনি ক্রমশ টাওয়ারের চূড়ায় উঠে যান। শেষ অবধি টাওয়ারের প্রায় ১২০ ফুট উচ্চতায় থাকা ল্যান্ডিংয়ে গিয়ে থামেন সীমন্ত। সীমন্তের এমন কাণ্ড দেখে বিপদের আশঙ্কায় দমকলে খবর দেন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ইন্দাস থানার পুলিশও। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, দমকল ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সীমন্তকে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার আশপাশের বেশ কিছু গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের ভিড় জড়ো হয় টাওয়ারের নীচে। ভিড় সামাল দিতে হিমসিম খেতে হয় পুলিশকেও।
সীমন্তের স্ত্রী মিঠু বলেন, “আমার স্বামী প্রায় দিনই মদ খেয়ে বাড়িতে বসে থাকেন। বারবার প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু কোনও ভাবেই মদের আসক্তি কমানো যায়নি। আজ এমন কাণ্ড করে বসবে ভাবতে পারিনি। স্বামী টাওয়ারে উঠে পড়তেই গ্রামের সিভিককর্মীকে খবর দিয়েছিলাম। ওই সিভিককর্মীই ঘটনার কথা থানায় জানান। এর পর পুলিশ আমার স্বামীকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করে। দমকলও নামাতে পারেনি। এখন স্বামীকে কী ভাবে নামানো হবে সেটাই চিন্তার বিষয়।” মোবাইল টাওয়ার সংস্থার আধিকারিক পীযূষ কুমার মণ্ডল বলেন, “টাওয়ারের নীচের অংশ ব্যারিকেড করে ঘেরা রয়েছে। ব্যারিকেডের দরজাতেও তালা লাগানো ছিল। কিন্তু ওই যুবক ব্যারিকেড টপকে ভিতরে ঢুকে এমন কাণ্ড করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy