বিবাদের শুরু শিঙাড়ার সঙ্গে বাড়তি চাটনি চাওয়া নিয়ে। বেশি চাটনি দিতে আপত্তি করায় এক মিষ্টির দোকানের কর্মী ও মালিককে মারধর এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হন বীরভূমের দুবরাজপুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি (কাউন্সিলর) শেখ নাজিরউদ্দিন। তবে জামিনযোগ্য ধারায় অভিযোগ দায়ের হওয়ায় এবং দোষ কবুল করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ায় সে রাতে থানা থেকে বন্ডে জামিন পান তিনি। কিন্তু শুক্রবার সে খবর জানাজানি হতে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের পাহাড়েশ্বর কালী মন্দিরের কাছাকাছি একটি দোকানে শিঙাড়া কিনতে গিয়েছিলেন নাজিরউদ্দিন। তাঁকে শিঙাড়া ও এক প্যাকেট চাটনি দেওয়া হয়। পুরপ্রতিনিধি আরও এক প্যাকেট চাটনি চান। অভিযোগ, তা দেওয়া সম্ভব নয় জানাতেই দোকানের কর্মী জিতেন্দ্রনাথ সাহার গালে চড় কষান নাজিরউদ্দিন। বাধা দিতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হন দোকানের মালিক কেশব দাস বৈষ্ণবও। দোকানের সামনে ভোম্বল দাস নামে এক যুবক প্রতিবাদ করায় তাঁকে নাজিরউদ্দিন দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ।
নাজিরুদ্দিনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। গত নভেম্বরে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে এক নার্সের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, হেনস্থা ও কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সে বারেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
বৃহস্পতিবার অবশ্য ওই পুরপ্রতিনিধিকে গ্রেফতারের দাবিতে দুবরাজপুর থানার সামনে রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন এলাকাবাসী। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরাতে পারেনি। ঘটনাস্থলে যান তৃণমূল জেলা সহসভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়, পুরপ্রধান পীষূষ পাণ্ডে প্রমুখ। পৌঁছন দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহাও।
অনুপ বলেন, ‘‘আগেও এমন কাণ্ড ঘটিয়ে পার পেয়েছেন অভিযুক্ত পুরপ্রতিনিধি। প্রতিবাদে, মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। পুলিশ ও তৃণমূল কী ব্যবস্থা নেয় দেখার।’’ নাজিরউদ্দিনকে গ্রেফতারের পরে অবরোধ ওঠে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশের উপস্থিতিতে নাজিরউদ্দিন সকলের সামনে দোকানের মালিক ও অন্যদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। তার পরে বন্ডে তাঁকে ছাড়া হয়। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, আদালত থেকেও নাজিরউদ্দিনকে জামিন নিতে হবে। ওই তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘ঘটনার জন্য অনুতপ্ত এবং ক্ষমা চেয়েছি।’’
তৃণমূল জেলা সহসভাপতি মলয় বলেন, ‘‘এমন হওয়া কাম্য নয়। ঘটনার নিন্দা করছি। দলের তরফে ওঁকে বোঝাব, এমন যাতে ফের না হয়।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)