Advertisement
২১ জানুয়ারি ২০২৫
TMC

তৃণমূল কর্মী খুনে ধৃত ৫, অভিযোগে নাম জড়াল মনিরুলের

মনিরুল-আনারুল বাদে বাকি ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম।—ফাইল চিত্র।

লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ০৪:৪৮
Share: Save:

তৃণমূল কর্মী সহদেব বাগদি খুনের ঘটনায় নাম জড়াল লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম এবং তাঁর দাদা আনারুল ইসলামের। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের ছেলে মনিরুল ও আনারুল-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। মনিরুল-আনারুল বাদে বাকি ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই পাঁচ জন এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত হলেও লাভপুরের পর্যবেক্ষক তথা দলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহের দাবি, ‘‘ধৃতেরা বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতী। বিজেপির চক্রান্তেই আমাদের কর্মী খুন হয়েছেন।’’ বিজেপি ওই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছে।

বোলপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী শ্যামসুন্দর কোনার জানান, নিহতের ছেলে সোমনাথ বাগদির অভিযোগ ক্রমে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ এবং ১২০( বি) ধারায় মামলা রজু করেছে। সোমবার ধৃতদের আদালতে হাজির করে পুলিশ ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে চায়। ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম মণিকুন্তলা রায় ১৪ দিন পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন।

শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে দেড় কিমি দূরে মাঠের মধ্যে লাভপুরের বাঘা গ্রামের সহদেব বাগদির ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ তিনি তৃণমূলের বুথ কমিটি এবং সংশ্লিষ্ট ঠিবা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য ছিলেন। তাঁর পরিবার ও তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক আক্রোশে তাঁকে কুপিয়ে খুন করেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। কিন্তু, লিখিত অভিযোগে মনিরুল ইসলামের নাম থাকায় ঘটনাটি অন্য মাত্রা পেয়েছে।

গত লোকসভা নির্বাচনের পরে পরেই তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক হওয়া মনিরুল বিজেপিতে যোগ দেন। তার পরে ২০১০ সালে তিন সিপিএম সমর্থক খুনের মামলায় নতুন করে তাঁর নাম জড়ানো হয়েছে। যদিও এর আগে ওই খুনের চার্জশিটে বীরভূম জেলা পুলিশই তাঁকে ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছিল। এর পরে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণার মামলাতেও মনিরুল ও আনারুলের নাম জড়ায়। ওই মামলায় আত্মসমর্পণের জন্য লাভপুরের নবগ্রামে, মনিরুলের বাড়িতে পুলিশ নোটিসও সাঁটায় পুলিশ। যদিও হাইকোর্টের নির্দেশে সেই প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।

এ বার তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনাতেও অভিযোগ হল বিধায়ক ও তাঁর দাদার বিরুদ্ধে। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, মনিরুল ইসলাম বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে থেকেই তার মদতে তৃণমূল কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। এ দিন সোমনাথ বলেন, ‘‘বাবাকে খুনের পিছনে মনিরুল ইসলামের হাত থাকতে পারে বলে আমাদের সন্দেহ। যে পাঁচ জনকে পুলিশ ধরেছে, তারা প্রত্যেকে মনিরুল-আনারুলের অনুগামী। সে কারণেই ওঁদের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি।’’ যদিও এ প্রসঙ্গে অভিজিৎ সিংহের মন্তব্য, ‘‘মনিরুল ইসলামের নামে অভিযোগ নিহতের পরিবার করেছে। এ ব্যাপারে দলের কোনও বক্তব্য নেই।’’

ফোন করে এবং মেসেজ পাঠিয়েও মনিরুলের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে, লাভপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মণ্ডলের দাবি, ‘‘ধৃতেরা কেউ আমাদের লোক নয়। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই ওই ঘটনা ঘটেছে। দীর্ঘদিন হল মনিরুল ইসলাম লাভপুরে নেই। স্রেফ রাজনৈতিক আক্রোশেই তৃণমূল পরিকল্পিত ভাবে বিধায়ক ও তাঁর দাদার নাম জড়িয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, আদি তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে সিপিএম-সহ বিভিন্ন দল থেকে শাসকদলে আসা লোকজনের একটা বিরোধ রয়েছে ওই এলাকায়। সেই বিরোধের জেরে এলাকার জনা দশেক আদি তৃণমূল কর্মী দীর্ঘদিন ধরে গ্রামছাড়া রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নিহত সহদেবের। এমনকি, ঘরছাড়াদের গ্রামে ফেরানোর জন্য তিনি বিভিন্ন স্তরে তদ্বির শুরু করেছিলেন। সেই নিয়ে দলের একটি অংশের সঙ্গে সহদেবের মতবিরোধ ছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy