হাসপাতালে আক্রান্ত। নিজস্ব চিত্র
খাতড়ার গুরুসদয় মঞ্চে তখন চলছে সঙ্গীতের আসর। অনুষ্ঠানে হাজির মন্ত্রী, জেলার পুলিশকর্তা, মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিক থেকে স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা। সে সময়ে মঞ্চ থেকে ঢিল ছোড়া দূরে এক দোকানে হামলা চালানো-সহ দোকানের মালিক ও কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য-সহ আরও দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। রবিবার সন্ধ্যায় খাতড়া বাজারের ঘটনা। আক্রান্ত দু’জন খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় সোমবার খাতড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এসডিপিও (খাতড়া) কাশীনাথ মিস্ত্রি। ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সন্ধ্যায় খাতড়া বাজারে মিছিল করে বিজেপি। দলের তরফে আজ, মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টার ব্যবসা বন্ধের ডাকও দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় দলীয় যোগের কথা তবে অস্বীকার করেছেন মন্ত্রী তথা রানিবাঁধের তৃণমূল বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডি।
খাতড়া শহরের বাসিন্দা স্বরূপানন্দ মণ্ডলের খাতড়া বাজারের সিনেমা রোডে রান্নাঘরের সামগ্রীর দোকান রয়েছে। ঘটনার সময়ে তিনিও ওই অনুষ্ঠানে গান শুনতে গিয়েছিলেন। দোকানে ছিলেন এক কর্মী। সে সময়ে এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত প্রসূন পণ্ডার নেতৃত্বে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রাম বাউরি ও আর এক তৃণমূল কর্মী লক্ষ্মণ বাউরি দোকানে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। কর্মীর ফোন পেয়ে দোকানে ছুটে যান তিনি। তাঁর অভিযোগ, “দোকানের সামনে যেতেই প্রসূন পণ্ডার নেতৃত্বে রাম ও লক্ষ্মণ বাউরি আমার উপরে চড়াও হয়। রাস্তায় ফেলে কিল, ঘুষি মারা হয়। দোকানের কর্মী মহীতোষ আটকাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা ও আমাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। এর পরে মহীতোষের মাথায় আঘাত করে চম্পট দেয় তারা।” পরে, তাঁদের হাসপাতালে
ভর্তি করানো হয়।
সোমবার হাসপাতালে শুয়ে স্বরূপানন্দ দাবি করেন, হামলাকারীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনও শত্রুতা নেই তাঁর। গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে এলাকায় প্রচার করেছিলেন। সেই রাগ থেকে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। মারধরের ঘটনায় এ দিন স্বরূপানন্দের স্ত্রী টুম্পা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের সঙ্গে ফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে খাতড়া ব্যবসায়ী সংগঠন। ‘চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র খাতড়া শাখার সম্পাদক নিত্যানন্দ মল্লিক, সংগঠনের সদস্য বাবলু সিংহ মহাপাত্রেরা বলেন, “নিন্দনীয় ঘটনা। এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ কাটাতে প্রশাসনের সক্রিয়তা দরকার। সংগঠনের তরফে পুলিশ-সহ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন রাখব, শান্ত, সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তুলতে।” এ নিয়ে বিশেষ বৈঠকও ডাকা হয়েছে বলে জানান তাঁরা। তবে বিজেপির ডাকা ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্ত মানতে রাজি নন জানিয়ে নিত্যানন্দ বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি আমরা সমর্থন করব না। আমরা চাই দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।”
ঘটনায় তৃণমূলের দিকে তোপ দেগেছে বিরোধী দলগুলিও। বাঁকুড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদক অজিত পতির দাবি, শান্ত শহরকে যারা অশান্ত করছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পদক্ষেপ দরকার। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলেরও অভিযোগ, “সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নেই খাতড়া শহরে। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তোলাবাজির চেষ্টা থেকে শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করতে চাইছে।” যদিও ঘটনায় দলের কোনও যোগ নেই দাবি করে মন্ত্রী জ্যোৎস্না বলেন, “যা ঘটেছে, ব্যক্তিগত ব্যাপার। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে দেখুক। অভিযুক্তরা দোষী হলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy