উদ্ধার হওয়া অস্ত্র, টাকা এবং গয়না। —নিজস্ব চিত্র।
গত কয়েক দিনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। রানিগঞ্জে একটি গয়নার দোকানে ডাকাতি করতে গিয়ে পুলিশের গুলি খায় ডাকাতদলের সদস্য। কিন্তু ডাকাতি থামেনি। এ বার পুলিশের তৎপরতায় ডাকাতির আগেই সশস্ত্র অবস্থায় ধরা পড়ল ভিন্রাজ্যের ডাকাত দলের দুই পান্ডা। বাঁকুড়ার কাটজুড়িডাঙা এলাকার ঘটনা। ধৃতদের কাছ থেকে একটি পাইপগান, তিন রাউন্ড কার্তুজ, তিনটি মোবাইল, নগদ টাকা এবং একটি বাইক উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে পাঠানো হলে সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
চলতি সপ্তাহে বুধবার পুরুলিয়ার একাধিক ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের তিন জনই ছিল পড়শি রাজ্যের। পুরুলিয়ার ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঁকুড়ার কাটজুড়িডাঙা থেকে গ্রেফতার করা হল ভিন্রাজ্যের দুই সশস্ত্র ডাকাতকে। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতদের নাম অজিত রায় এবং রোহিত রায়। তাদের বাড়ি যথাক্রমে বিহারের বৈশালী এবং পটনায়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঁকুড়ার কাটজুড়িডাঙা ফ্লাইওভারের মুখে থাকা একটি গয়নার শোরুমে ডাকাতির উদ্দেশে তিনটি বাইকে চড়ে ছয় ডাকাত আসে কাটজুড়িডাঙা এলাকায়।বিশেষ সূত্রে ওই খবর আগেই পেয়ে গিয়েছিল পুলিশ। এলাকায় টহল শুরু করে তারা। সেখানে ছ’জনের গতিবিধি সন্দেহজনক বলে মনে হয় তাদের। অন্য দিকে, পুলিশের তাড়া খেয়ে চার জন দুটি বাইকে চড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে একটি বাইক। ওই বাইকে থাকা দু’জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়া সদর থানায়।
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, রোহিত অপরাধ জগতে নতুন। তবে অজিতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালে বিহারের মোতিয়ারি এলাকায় ব্যাঙ্ক ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত থাকায় তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। দু’বছর জেল খাটে সে। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে আবার অপরাধ জগতেই জড়ায় অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, ধৃতেরা স্বীকার করেছে যে, নামি সংস্থার গয়নার শোরুমে ডাকাতির পরিকল্পনা ছিল তাদের। ডাকাতির আগে ওই শোরুমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা-সহ খুঁটিনাটি জানতে এবং ডাকাতির পর নিশ্চিন্তে গা ঢাকা দেওয়ার জন্য রুট ম্যাপ তৈরি করতে ডাকাত দলটি একাধিকবার এলাকায় রেইকি করে যায়। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, “ডাকাত দলটিতে মোট ছ’জন ছিল। আমরা দু’জনকে গ্রেফতার করলেও বাকিরা দুটি বাইকে চড়ে পালিয়ে যায়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পালিয়ে যাওয়া চার জনেরও খোঁজ শুরু হয়েছে।” ডাকাতির আগেই ডাকাতদলকে ধরে ফেলায় স্বস্তি পেয়েছেন গয়নার ওই শোরুমের আধিকারিক থেকে কর্মীরা। ম্যানেজার সুশান্ত অধিকারী বলেন, “পুলিশি তৎপরতায় এ যাত্রা রক্ষা পেলেও আতঙ্ক রয়ে গিয়েছে। ভিন্রাজ্যের দুষ্কৃতীরা কেন এ রাজ্যে এসে দুষ্কর্ম করে অনায়াসে গা ঢাকা দিচ্ছে, তা দেখার জন্য পুলিশকে আরও তৎপর হতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy