প্রতীকী ছবি
অবসরপ্রাপ্ত এক অধ্যাপিকার এটিএম কার্ড ব্যবহার করে তাঁর পেনশন অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষাধিক টাকা লোপাট করার অভিযোগে পরিচারিকা ও তার সঙ্গীকে গ্রেফতার করল শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ।
এই কাজে তাদের সহযোগিতা করেছে বীরভূমের সাইবার থানা। শনিবার রাতে নানুর থানা এলাকা থেকে গঙ্গামণি দাস নামে বছর ছাব্বিশের ওই পরিচারিকা এবং পাড়ুই থানা এলাকা থেকে বাহাদুর দাস নামে বছর তেত্রিশের দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে রবিবার সিউড়ি সিজেএম আদালতে তোলে পুলিশ। মামলার সরকারি আইনজীবী (এপিপি) শুভাশিস চট্টোপাধ্যায় জানান, পুলিশের আবেদন মেনে অভিযুক্তদের ৫ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন বিচারক। আগামি ২৬ তারিখ ফের তাদের আদালতে পেশ করা হবে। অভিযুক্তদের তরফে কোনও জামিনের আবেদন করা হয়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ হওয়ার এক দিনের মধ্যেই অভিযুক্তদের ধরতে পারলেও লোপাট করা টাকার হদিস পেতে এবং অন্য কেউ এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত কিনা জানতে, ধৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বভারতীর অবসরপ্রাপ্ত ওই অধ্যাপিকা শান্তিনিকেতনে সীমান্তপল্লির বাড়িতে একাই থাকেন। অশক্ত শরীর। বাড়ির কাজকর্মে সাহায্য করার জন্য গঙ্গামণি নামে ওই তরুণীকে পরিচারিকা হিসেবে রেখেছিলেন। পুলিশের অনুমান, বাড়ির সব কিছুই গঙ্গামণির নখদর্পণে ছিল। এমনকি বৃদ্ধার এটিএম কার্ড এবং সেটির পিন নম্বরও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশে জেনেছে, টাকা হাতানোর জন্য সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়েছে ওই পরিচারিকা ও তার সঙ্গী।
পুলিশে সূত্রে জানা গিয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত ওই অধ্যাপিকার সঙ্গে কথাকাটিতে জড়িয়ে কিছু দিন আগে ওই তরুণী কাজ ছেড়ে দেওয়ার আগে পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই চলছিল। এমনকি, পেনশন অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হওয়ার বিষয়টিও জানতেন না ওই বৃদ্ধা। পুলিশের কাছে অশীতিপর ওই বৃদ্ধা জানিয়েছেন, বোলপুরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে গিয়ে দিন দুই আগে নিজের পাসবই আপডেট করাতে গিয়ে তিনি দেখেন, মার্চের এক তারিখ থেকে এপ্রিলের ১৯ তারিখ পর্যন্ত পঞ্চাশ দিন ধরে দফায় দফায় ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে লোপাট হয়ে গিয়েছে। এই মর্মে শনিবার শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এটিএম কার্ড ব্যবহার করে এই অবপাধ হয়েছে বুঝতে পেরে আসরে নামে সাইবার থানাও। তার পরেই অভিযুক্তেরা ধরা পড়ে।
এই বিষয়ে একটি কথাও বলতে রাজি হননি বোলপুর সীমান্তপল্লির ওই প্রবীণ আবাসিক। তবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে বার্ধক্যজনিত কারণে যাতে পিন নম্বর ভুলে না যান, সেটি একটি কাগজে লিখে রেখেছিলেন ওই বৃদ্ধা। সেটাকে হাতিয়ার করেই ওই পরিচারিকা তার সঙ্গীকে কাজে লাগিয়ে টাকা তুলেছে। তবে যে কায়দায় ওই বৃদ্ধার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতানো হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সেটা একা থাকা যে কোনও মানুষকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে। কলকাতাতেও গত কয়েক বছরে একা থাকা বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা একাধিকবার অপরাধের শিকার হয়েছেন। শান্তিনিকেতনেও অনেক অবসরপ্রাপ্ত বয়স্ক মানুষজন একা থাকেন। বাড়িতে তাঁদের ভরসার লোক বলে পরিচারক, পরিচারিকা। এর আগে শান্তিনিকেতনেও বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধাকে জখম করে হার ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে যা ঘটল, তা তাঁদের নতুন করে ভাবিয়ে তুলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy