ট্রান্সফর্মারে ধাক্কা মেরেছে লরি। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
দু’টি লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে নিয়ন্ত্রণ হারানো একটি লরির ধাক্কায় মৃত্যু হল এক রেলকর্মীর। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ জাতীয় সড়কের উপর রামপুরহাট থানার মাঝখণ্ড মোড়ের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃত রেলকর্মীর নাম পলাশ সরকার (৩২)। তিনি উত্তর চব্বিশ পরগনার গাইঘাটা থানার ভেনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ঘটনায় রাকেশ ঘোষ এবং অজিত কেশরী নামে দুই রেলকর্মী আহত হয়েছেন। আহত দুই রেলকর্মীর মধ্যে রাকেশ উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁ থানা এলাকার বাসিন্দা। অজিতের বাড়ি রামপুরহাটের মহাজন পট্টি এলাকায়। আহত হন একটি লরির চালক যশপ্রীত সিংহ এবং খালাসি ধর্মপাল সিংহ। আহতদের সকলকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। অজিত কেশরীকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লোহার রড বোঝাই গুয়াহাটিগামী রামপুরহাটমুখী একটি দশ চাকা লরির সঙ্গে মল্লারমুখী একটি খালি লরির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মল্লারপুরমুখী লরিটি মাঝখণ্ড মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসকে অতিক্রম করতে গিয়ে রামপুরহাটমুখী দশ চাকার লরিটিকে ধাক্কা মারে। সংঘর্ষের পরে রামপুরহাটমুখী দশ চাকা লরিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিয়ন্ত্রণ হারানো লরিটি মাঝখণ্ড মোড়ে প্রথমে পুলিশ স্ট্যাণ্ডে ধাক্কা মেরে পরে একটি খাবারের দোকানে ধাক্কা মারে। পরে সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে ইলেকট্রিকের ট্রান্সফর্মারে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনা ঘটার পরেই খাবারের দোকানে বসে থাকা রেলকর্মী পলাশ সরকার দোকান থেকে বেরিয়ে সামনের দিকে ছুটে পালিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারানো লরির ধাক্কায় গুরুতর জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিয়ন্ত্রণ হারানো লরিটি পুলিশ স্ট্যান্ডে ধাক্কা না মারলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটত। লরিটির তেলের ট্যাঙ্কার ফেটে যাওয়ার পরে খাবারের দোকানের এক অংশে ধাক্কা মারার ফলে লরিটিতে আগুন লেগে যাওয়ারও সম্ভাবনা ছিল।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, রেলকর্মী মীর নাসের আলি জানান, মৃত রেলকর্মী পলাশ সরকার-সহ আরও কয়েক জন চতুর্থ শ্রেণির রেলকর্মী মাঝখণ্ড রেল গেটের দিকে লাইন মেরামতির কাজ করছিলেন। দুপুরের খাবার সময়ে জাতীয় সড়কের ধারে মাঝখণ্ড মোড়ে একটি খাবারের দোকানে তাঁরা বসে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আচমকা দু’টি লরির ধাক্কার শব্দ শুনেই আমরা কয়েক জন খাবারের দোকানের একটি ঘরে ঢুকে যাই। পলাশ সামনের দিকে ছুটে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। নিয়ন্ত্রণ হারানো লরিটি পলাশকে ধাক্কা মারে এবং পলাশ ঘটনাস্থলেই মারা যায়।’’ রাকেশ ঘোষ ও অজিত লরির ধাক্কায় ভেঙে যাওয়া খাবারের দোকানের দেওয়ালের ইটের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রামপুরহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। নিয়ন্ত্রণ হারানো লরিটিকে ক্রেন দিয়ে জাতীয় সড়কের ধারে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়। ভেঙে যাওয়া ট্রান্সফর্মারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ঘটনার পরেই জাতীয় সড়কে কিছুক্ষণের জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy