বিক্ষোভ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের।—নিজস্ব চিত্র
নাগরিক পরিষেবা নিয়ে পুরুলিয়া পুরসভায় স্মারকলিপি দিতে এসে পুরপ্রধানের দেখা না পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। সোমবারের ঘটনা। পরে তাঁরা পুরসভা চত্বরে বিক্ষোভও দেখান।
বিজেপির কর্মী-সমথকদের ক্ষোভ, এ দিন যে তাঁরা শহরের নাগরিক পরিষেবা সম্পর্কে তাঁদের বক্তব্য স্মারকলিপির মাধ্যমে পুরপ্রধানকে জানাবেন, তা আগাম পুরসভাকে জানানো হয়েছিল। তবু পুরপ্রধানকে পাওয়া গেল না। এ দিন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল করে স্লোগান দিতে দিতে পুরসভায় পৌঁছন। দলের জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ও মিছিলে ছিলেন। বিকাশবাবু বলেন, “পুরুলিয়া শহরের পানীয় জলের অভাব রয়েছে। নিকাশি ব্যবস্থা ভাল নয়, শহরের নর্দমাগুলির অত্যন্ত বেহাল অবস্থা। আর শহরের কেন্দ্রস্থলে যে বাসস্ট্যান্ড রয়েছে, তাকে এক কথায় নরক বললেও কম বলা হয়।” বিজেপি-র ১৪ দফা দাবির মধ্যে ছিল শহরের কিছু এলাকায় গুমটি থেকে বেআইনি ভাবে চোলাই মদ বিক্রি বন্ধ করা, শহরের বিভিন্ন পুকুর ও জলাশয়ের ঘাটগুলির সংস্কার প্রয়োজন ইত্যাদি।
শহরের ফুসফুস হিসেবে পরিচিত সাহেব বাঁধের সংস্কার নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। বিকাশবাবুর অভিযোগ, সাহেব বাঁধের জল মানুষ খাওয়ার জন্যও ব্যবহার করেন। অথচ সাহেব বাঁধে নোংরা জল মিশছে। পুরসভা নির্বিকার। বিজেপি-র আরও অভিযোগ, শহরের অধিকাংশ রাস্তাই ভাঙাচোরা। সামান্য বৃষ্টিতেই খানাখন্দে জল জমে যাচ্ছে। বিশেষত বাইপাসের অবস্থা অত্যন্ত থারাপ। বিকাশবাবুর কথায়, “এই শহরে পরিচিত কেউ এলে পরিষেবার এই হাল দেখে লজ্জা লাগে! এই সব সমস্যার কথাই আমরা পুরপ্রধানকে জানানোর জন্য এসেছিলাম। কিন্তু, এসে শুনলাম তিনি নেই।”
বিজেপির পুরুলিয়া শহর মণ্ডলের সভাপতি শিবশঙ্কর লায়েক বলেন, “পুরপ্রধানকে যে এ দিন স্মারকলিপি দেব, তা আগাম জানিয়েছিলাম। এখানে এসে পুরসভার আধিকারিকদের কাছ থেকে জানতে পারলাম, উনি অসুস্থ। তখন আমরা দাবি করি, উপ-পুরপ্রধান আমাদের স্মারকলিপি নিন।” দুপুর ১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরে পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার দিলীপকুমার পালকে স্মারকলিপি দিয়ে বেরিয়ে আসেন বিজেপি কর্মীরা। পুরুলিয়ার উপ-পুরপ্রধান সামিমদাদ খান বলেন, “আমি স্মারকলিপি নেব না।” কেন? তাঁর ক্ষোভ, “গত জানুয়ারি থেকে রাস্তা সংস্কারের অর্থ এসে পড়ে রয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি। রাস্তা সংস্কার নিয়ে কোনও কিছু জানতে চাইলে আমি ওঁদের (বিজেপি) কী জবাব দেব? এই স্মারকলিপি পুরপ্রধানেরই গ্রহন করা উচিত!” তৃণমূল পরিচালিত পুরুলিয়া পুরসভার উপ-পুরপ্রধান সম্প্রতি ফেসবুকেও পুরুলিয়া পুরসভার কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্মারকলিপি নিয়ে পুরপ্রধান এবং উপ-পুরপ্রধানের ‘দ্বন্দ্ব’ ফের প্রকাশ্যে চলে এল বলেই মনে করছেন পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দাদের বড় অংশ।
পুরপ্রধান তারকেশ চট্টেপাধ্যায় বলেন, “আমি অসুস্থ। সে কথা আমি পুরসভায় জানিয়েও দিয়েছিলাম। তাই স্মারকলিপি নিতে পারিনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy