রতনপল্লি মাঠে উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরের গোষ্ঠী সংঘর্ষ নিয়ে তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী বন্ধ করার ঘটনায়, উদ্যোক্তা ছাত্র সংগঠন এআইএসএ ফের ক্যাম্পাসে ওই তথ্যচিত্র দেখানোর সিদ্ধান্ত নিল। তার জন্য অবশ্য অনুমতি নেওয়া হবে। তবে, অনুমতি না মিললেও ওই তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী তাঁরা করবেন বলে পড়ুয়ারা জানিয়েছেন। ‘ছাত্রছাত্রীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হননের প্রতিবাদে’, আজ বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর সমস্ত বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি সভা ডেকেছে তারা। এ দিকে মঙ্গলবার রাতে ওই তথ্যচিত্র প্রদর্শনী বন্ধের ঘটনা জানাজানি হতেই, বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। মুখে কুলুপ এঁটেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, সিপিআই (এমএল)-এর ছাত্র সংগঠন এআইএসএ-র উদ্যোগে শান্তিনিকেতনের রতনপল্লির মাঠে মঙ্গলবার রাতে প্রোজেক্টরের মাধ্যমে ‘মুজফ্ফরনগর বাকি হ্যায়’ নামে ওই তথ্যচিত্রটির শুরু হয়। এই তথ্যচিত্রে মুজফ্ফরনগরের সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এআইএসএ-এর বিশ্বভারতী ইউনিট সভাপতি সংগ্রাম মণ্ডল ও সম্পাদক ঋতম রায়ের অভিযোগ, কিছু পরেই বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা বিভাগ এবং শান্তিনিকেতন তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় অনুমতি না থাকার অজুহাতে তথ্যচিত্রটির স্ক্রিনিং বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এ দিন শান্তিনিকেতনের পুরনো ঘণ্টাতলায় নিজেদের বৈঠকের পর ওই সংগঠনের বিশ্বভারতী ইউনিট সভাপতি সংগ্রাম মণ্ডল ও সম্পাদক রিতম রায় জানান, ‘‘ওই তথ্যচিত্র ক্যাম্পাসে ফের দেখানো হবে। সকল ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ক্যাম্পাসে কর্তৃপক্ষের দাদাগিরির প্রতিবাদে, স্মারকলিপি দেওয়া হবে।” এ দিনও সিপিআই (এম-এল)-এর বীরভূম জেলা সম্পাদক শৈলেন মিশ্রের দাবি, ‘‘এটি সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী তথ্যচিত্র। কেন প্রদর্শনী বন্ধ হল, বুঝতে পারছি না।’’
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ‘মুজফ্ফরনগর বাকি হ্যায়’-এর স্ক্রিনিং চলাকালীন দিল্লির এক কলেজে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি কর্মী-সমর্থকেরা ভাঙচুর চালিয়ে শো বন্ধ করে দেয়। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ২৫ অগস্ট দেশের ১৭৮টি জায়গায় এই তথ্যচিত্রের স্ক্রিনিং করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো এ রাজ্যের শান্তিনিকেতন, বিষ্ণুপুর, ব্যারাকপুর, কলকাতা-সহ মঙ্গলবার দিন স্ক্রিনিং হয়। এ দিকে তথ্যচিত্র প্রদর্শনী বন্ধের ঘটনা জানাজানি হতেই কেউ কেউ সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। কেউ কেউ আবার এই ঘটনার প্রতিবাদে নিন্দা করেছেন। শান্তিনিকেতন এলাকার সাহিত্য ও সংস্কৃতিমনস্করা প্রকাশ্যে এই ঘটনায় সরব না হলেও, এই ঘটনায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের আচরনে ক্ষুব্ধ। তবে ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি বিশ্বভারতী।
এ দিকে, নিন্দার ঝড় উঠলেও ঘটনা নিয়ে এ দিনও কোনও মন্তব্য করেননি বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়। মন্তব্য করতে চাননি বিশ্বভারতীর ছাত্র পরিচালক শমিত রায় ও জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy