মুখোমুখি সেলিম-মদন ছবি সংগৃহীত।
মন্ত্রিসভা ও তৃণমূল কংগ্রেসের পদ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় অপসারিত হলেও দুর্নীতির প্রতিবাদ অব্যাহত। কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা জায়গায় বৃহস্পতিবারও পথে নেমেছে বিরোধীরা। শিক্ষা-সহ সরকারের নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতির গোটা চক্রকে ধরা এবং যোগ্য চাকরি-প্রার্থীদের অবিলম্বে নিয়োগের দাবিতে সর্বত্র আন্দোলন চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছে সিপিএম।
বেলঘরিয়ার একটি আবাসনে পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে বিপুল টাকা ও সোনা উদ্ধার করেছে ইডি। ‘চোর ধরো, জেল ভরো, কামারহাটির মর্যাদা রক্ষা করো’— এই স্লোগান দিয়ে এ দিনই সেখানে পথে নেমেছিল সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ছিলেন কামারহাটিতে এ দিন সন্ধ্যার ওই মিছিলের নেতৃত্বে। বি টি রোডে রথতলা মোড়ের কাছে সিপিএমের মিছিলের সামনে চলে আসে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের গাড়ি। সেলিমের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন মদন। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগে সরব হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
মিছিলে যাওয়ার আগে আলিমুদ্দিনে সেলিমের বক্তব্য, ‘‘চায়ের ভাঁড়ে একটা মাছি পড়েছে, সেটা তুলে ফেলে দিলাম— ব্যাপারটা এই রকম নয়। এটা চায়ের ভাঁড়ও নয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায় মাছিও নন। ভাণ্ডারের গণ্ডার! ওই ভাণ্ডার ধরতে হবে।’’ শিক্ষক-প্রার্থীদের সঙ্গে এ দিন ফোনে কথা বলে তাঁদের আলোচনায় ডেকেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রেক্ষিতে সেলিম বলেছেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের শুভাকাঙ্খী হিসেবে বলছি, আপনারা অনেককে বিশ্বাস করে ঠকেছেন। রাস্তায় বসে আছেন ৫০০ দিন। কোনও ভাঁওতা হতে দেবেন না। একটাই কথা, নিয়োগের সরকারি আদেশনামা বুঝে নিতে হবে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও এ দিন মন্তব্য করেছেন, যা টাকা উদ্ধার হয়েছে, তা ২৫% মাত্র। কলেজে ভর্তির নামে টাকা নেওয়া থেকে শুরু করে সরকারি প্রকল্পের টাকা নয়ছয়— বহু দুর্নীতির হিসেব বাকি।
তৃণমূলের নেতা তাপস রায় অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘বিরোধীরা অনেক কিছু বলতেই পারেন। কিন্তু একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই। ষে টাকার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, তার সঙ্গে সরকার বা তৃণমূল দলের কোনও সম্পর্কই নেই।’’
দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা-মন্ত্রীদের অপসারণ এবং ‘প্রতারিত’ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ন্যায়-বিচারের দাবিতে আশুতোষ কলেজ থেকে মিছিল করে গিয়ে হাজরা মোড়ে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্র পরিষদ। পথচলতি বাস-ট্যাক্সিতে ‘তৃণমূল হইতে সাবধান’ স্টিকার সেঁটে দেয় তারা। এই বিক্ষোভ ঘিরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে আহত হন ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি সৌরভ প্রসাদ, দেবজ্যোতি দাস, রেজাউল হক, বিমান মণ্ডলেরা। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করে নিয়ে যায় লালবাজারে।
এসইউসি-র রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘কেবল মন্ত্রীর অপসারণ দিয়েই সরকারের দুর্নীতির সব দোষ স্খালন হবে না। আরও নানা স্তরের দুর্নীতিত যুক্ত সমস্ত ব্যক্তির দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে এবং মেধা তালিকাভুক্ত সব চাকরি-প্রার্থীকে নিয়োগ করতে হবে।’’ এই দাবিতে এ দিন রাজ্য জুড়ে ‘ধিক্কার দিবস’ ছিল এসইউসি-র। রাজ্য জুড়েই তাদের ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র ডাকে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা হয়েছে।
চারু মজুমদারের ৫০তম ‘শহিদ বার্ষিকী’তে তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা-মন্ত্রীদের শাস্তি, চাকরি-প্রার্থীদের স্বচ্ছ নিয়োগের দাবি এবং দেশ জুড়ে বুলডোজ়ার-রাজের বিরুদ্ধে শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন। মিছিল শেষে লিবারেশনের পলিটব্যুরো সদস্য পার্থ ঘোষ বলেন, গণ-আন্দোলনের চাপে এক মন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু সব দুর্নীতির দায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে। চাকরি-প্রার্থীদের নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত রাস্তার লড়াইও জারি থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy