ক্লাস চলাকালীন ছাত্রীদের খারাপ ভাবে স্পর্শ, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মতো ঘটনা তো চলেই আসছিল। রাতেও ছাত্রীদের ফোনে অশ্লীল মেসেজ পাঠানো শুরু হয়েছে সম্প্রতি। তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের বিক্ষোভে উত্তাল হল পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর কাষ্ঠশালী নিভাননী উচ্চ বিদ্যালয়। চাপের মুখে পদত্যাগও করেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক নিরঞ্জন মণ্ডল।
স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি অলোক নাথ বলেন, ‘‘টিআইসি পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে আমার হাতে স্কুলের চাবি তুলে দিয়েছেন। তার পরেই বিক্ষোভ ওঠে। প্রশাসনকে ঘটনার কথা জানানো হয়েছে। ওরা যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা মেনে নেওয়া হবে।” কালনা মহকুমা সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক কৌশিক ঘোষ বলেন, ‘‘ছাত্রীদের আনা অভিযোগের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে।”
স্কুল সূত্রে খবর, অভিযুক্ত তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত বুধবারই প্রধানশিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন কয়েক জন ছাত্রী। তার পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ না করায় বৃহস্পতিবার ক্ষোভে ফেটে পড়েন ছাত্রীরা। এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘অঙ্কের শিক্ষক গত বুধবার আমার ফোনে উল্টোপাল্টা মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। আমাকে ছবি পাঠাতে বলেছিলেন। ভূগোলের শিক্ষক ক্লাসে ‘ব্যাড টাচ’ করেন। ম্যাপ পয়েন্টিং শেখানোর অছিলায় আমাদের হাত চেপে ধরেন।’’
বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের সময় স্কুলে ছিলেন ওই দুই অভিযুক্ত শিক্ষক। স্কুলের অন্য শিক্ষকদের ফোন থেকে তাঁদের ফোন করা হয়েছিল। অভিভাবকদের দাবি, চাপের পড়ে ওই দু’জন অভিযোগ স্বীকারও করেছেন। আর এক অভিযুক্ত শিক্ষককে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি এ রকম কোনও ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।’’
বিক্ষোভের জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরেই জরুরি বৈঠকে বসেছিল স্কুল পরিচালন সমিতি। সেই বৈঠকের পরেও সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক।