দুর্ঘটনার মুহুর্ত। — ফাইল চিত্র।
মাত্র ১২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডে বেজেছিল ‘বিপদের ঘণ্টা’!
মালগাড়ি এসে পিছন থেকে ধাক্কা মারল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে। খেলনাগাড়ির মতো এক্সপ্রেসের পিছনের কামরা উঠে যায় মালগাড়ির ইঞ্জিনের উপর। দুর্ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে নানা তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। কার দোষ, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে, এই পরিস্থিতিতেই রেল ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য সুরক্ষা কমিশনার জনককুমার গর্গের তত্ত্বাবধানে বুধবার থেকেই তদন্ত শুরু হয়েছে। বুধবার ডেকে পাঠানো হয় রাঙাপানির স্টেশন ম্যানেজার, মালগাড়ির ম্যানেজার (গার্ড), রাঙাপানি রেল গেটের গার্ড, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালকদের ৷ সকাল সকালই তাঁরা হাজিরা দেন। শিলিগুড়ি এনজেপি সংলগ্ন এডিআরএম অফিসে বসছেন তদন্তকারী কমিটির সদস্যেরা। সেখানে একে একে হাজিরা দিচ্ছেন সকলে। সকাল থেকেই থমথমে পরিবেশ।
অন্য দিকে, এই দুর্ঘটনার তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টও জমা পড়েছে রেলের সুরক্ষা কমিশনের কাছে। রেল সূত্রে খবর, সেই রিপোর্টে দুর্ঘটনার দিনে মালগাড়ি এবং কাঞ্চনজঙ্ঘার গতিবেগ সংক্রান্ত তথ্যের উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়াও সে সময় কর্তব্যরত কর্মীরা কে, কী দায়িত্ব পালন করছিলেন, তা-ও রয়েছে ওই রিপোর্টে।
প্রাথমিক তদন্তে যে তথ্য উঠে আসছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, সোমবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস রাঙাপানি স্টেশনে ঢোকে। ছাড়ে ৮টা ২৭ মিনিট নাগাদ। দুর্ঘটনাটি ঘটে ৮টা ৫৫ মিনিটে। আর মালগাড়িটি ৮টা ৪২ মিনিটে রাঙাপানি স্টেশন ছাড়ে। রাঙাপানি স্টেশন থেকে দুর্ঘটনাস্থলের দূরত্ব মেরেকেটে আড়াই কিলোমিটার। হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, ওই পথ অতিক্রম করতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস সময় নেয় প্রায় ২৮ মিনিট। অন্য দিকে, মালগাড়ির সময় লাগে ১৩ মিনিট। আরও ভাল করে বললে ১২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড।
প্রশ্ন উঠছে, রাঙাপানি স্টেশন থেকে মাত্র দু’কিলোমিটারের মধ্যে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস কি আরও কোথাও দাঁড়িয়েছিল? না কি মালগাড়ির গতিবেগ বেশি ছিল? উল্লেখ্য, সোমবার ভোর প্রায় সাড়ে ৫টা থেকে ‘অকেজো’ ছিল রাঙাপানি এবং চটেরহাটের মধ্যেকার স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা। এই পরিস্থিতিতে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ‘কাগুজে অনুমতি’ দেওয়া হয় ট্রেনচালকদের। রেলের পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘পেপার লাইন ক্লিয়ার টিকিট’ (পিএলসিটি)। সেই নির্দেশনামায় বলা হয়, যাত্রাপথে সিগন্যাল লাল থাকলে চালক ট্রেন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। তবে চালককে নজরে রাখতে হবে, তাঁর যাত্রাপথে রেলগেট বন্ধ আছে কি না।
এই অবস্থায় কার দোষে দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। একই সঙ্গে রাঙাপানি স্টেশন পেরিয়ে যে রেলগেট পড়ে, তার গার্ড কী করছিলেন, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। মনে করা হচ্ছে, বুধবার সুরক্ষা কমিশনও সেই সব প্রশ্নের জবাব চাইবে। অন্য দিকে, বুধবারই শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মালগাড়ির সহ-চালক মনু কুমারের সঙ্গে দেখা করতে যায় সিট। তবে সেখানে কী কথা হয়েছে, সে সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমের সামনে কোন কথা বলেনি তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy