কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনাস্থল। ছবি: পিটিআই।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার প্রভাব বুধবারও পড়ল রেল পরিষেবায়। ওই শাখায় বেশ কিছু ট্রেনের সময়সূচি বদল করা হয়েছে, এমনই জানাল পূর্ব রেল। তবে রেল এ-ও দাবি করেছে, ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনাস্থলে রেললাইন মেরামতির কাজ শেষ করা হয়েছে। পরিষেবাও স্বাভাবিক। কিন্তু রেলের দাবি মানতে নারাজ যাত্রীরা। অনেকেরই দাবি, ওই লাইনে যাতায়াত করা প্রায় প্রত্যেকটি ট্রেনই নির্ধারিত সময়ের তুলনায় দেরিতে চলছে। কোনও কোনও ট্রেন তো আবার চার-পাঁচ ঘণ্টাও লেট। দুর্ঘটনার পর থেকেই ওই লাইনে ট্রেন পরিষেবায় এমন ছবি দেখা যাচ্ছে। বুধবারও যাত্রীভোগান্তির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
রেল জানিয়েছে, বুধবার মোট ছ’টি ট্রেনের সময়সূচি বদল করা হয়েছে। কোন কোন ট্রেনের সূচি বদল করা হয়েছে, সেই তালিকাও প্রকাশ করেছে রেল। জানানো হয়েছে, ১৩১৪৭ শিয়ালদহ-বামনহাট উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের পরিবর্তে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টোয় শিয়ালদহ থেকে ছাড়বে।
এ ছাড়াও ১৩১৪৯ শিয়ালদহ-আলিপুরদুয়ার কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস বুধবার রাত ৮টা ৩৫ মিনিটের পরিবর্তে ছাড়বে রাত ১২টা ১৫মিনিটে। ১২৩৭৭ শিয়ালদহ-আলিপুরদুয়ার পদাতিক এক্সপ্রেস রাত ১১টা ২০ মিনিটের পরিবর্তে বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ ছাড়বে। একই সঙ্গে সময়সূচি বদল করা হয়েছে ১৩১৪১ শিয়ালদহ-নিউ আলিপুরদুয়ার তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেসেরও। বুধবার দুপুর ৩টের পরিবর্তে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে এই ট্রেন ছাড়বে শিয়াদহ থেকে।
শিয়ালদহের পাশাপাশি হাওড়া থেকে দু’টি দূরপাল্লার ট্রেনের সূচিও বদল করা হয়েছে। ১২৩৪৫ হাওড়া-গুয়াহাটি সরাইঘাট এক্সপ্রেস বুধবার বিকেল ৪টে ০৫ মিনিটের পরিবর্তে ছাড়বে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায়। পাশাপাশি হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি শতাব্দী এক্সপ্রেস দুপুর ২টো ২৫ মিনিটের পরিবর্তে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে ছাড়বে।
সূচি বদলের জন্য যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে পূর্ব রেল। তবে রেল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কোনও ভাবেই যাত্রীদের হয়রানি হবে না। কিন্তু গত দু’দিন ধরে যে ছবি প্রকাশ্যে আসছে, তা দেখে বুধবারও যাত্রীদুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। সোমবার সকালে ফাঁসিদেওয়াতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পর থেকেই ওই লাইনে ট্রেন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটেছে। কিছু ট্রেন বাতিল হয়েছে, কিছু ট্রেনের যাত্রাপথ পরিবর্তন করা হয়েছে। বেশির ভাগ ট্রেনই আলুয়াবাড়ি রেল জংশন-বাগডোগরা-শিলিগুড়ি- নিউ জলপাইগুড়ি লাইন দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
কেন ট্রেন এত দেরিতে চলছে? অনেকের মতে, ঘুরপথে যাওয়ার জন্য সময়ও বেশি লাগছে ট্রেনগুলির। একই সঙ্গে ওই লাইনের উপর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিটি ট্রেনকেই মাঝপথে বার বার দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে স্বভাবতই সব ট্রেন দেরি করছে। যাত্রীদের কথায়, ‘‘সন্ধ্যাবেলা শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু সেই ট্রেন রাত দেড়টায় শিয়ালদহে ঢুকল। অত রাতে বাড়ি ফেরার কোনও গাড়ি পাইনি। ফলে স্টেশনেই রাত কাটাতে হয়েছে।’’
অন্য এক যাত্রীর কথায়, ‘‘ট্রেনের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে ছিলাম। রেলের তরফে কেউ যোগাযোগ করেনি। কেন ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে, কখন ছাড়বে, সে সম্পর্কে আমাদের মতো যাত্রীদের কোনও কিছু জানানো হয়নি। গোটা ট্রেনে রেলকর্মীদের খুঁজে পাওয়াই ভার।’’ এমন অভিজ্ঞতা কমবেশি প্রায় সব যাত্রীরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy