তালা-বন্ধ: এ ভাবেই পড়ে জগদ্দলের কাউগাছি হাসপাতাল। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
শাসক দলের লোকজন বা তাদের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ আকছার ওঠে। কখনও তা সিন্ডিকেটে, কখনও পাড়ার পুজোয়, কখনও বা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকারের চেষ্টাও হয়। কিন্তু এ বার খোদ দলের বিধায়কই তাঁর দলের পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর আত্মীয়ের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ মেনে নিলেন। মানলেন তোলাবাজির কারণেই তাঁর এলাকায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে একটি হাসপাতাল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেউ কথা শোনেননি।’’
ঘটনাস্থল উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলের কাউগাছি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। এখানে বহু বছর ধরেই মিশনারিরা একটি হাসপাতাল চালাতেন। বাম আমলেই সেটি পঞ্চায়েতের হাতে আসে। কিন্তু কিছু দিন চলার পরে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তৃণমূলের আমলে হাসপাতালটি এক ব্যক্তিকে ১০ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়। চুক্তি হয়, হাসপাতালের কর্মীদের বকেয়া মেটানোর পাশাপাশি ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে দেবব্রত গোস্বামী নামে ওই ব্যক্তি পাঁচ লক্ষ টাকা জমা দেবেন। ফান্ডের টাকা দুই লক্ষে নেমে এলে ফের তিনি তিন লক্ষ টাকা জমা দেবেন। এ ভাবেই চলতে থাকবে।
২০১৫-র ১ জানুয়ারি উদ্বোধন হয় হাসপাতালটি। অভিযোগ, সমস্যার সূত্রপাত ৭ তারিখ থেকে। দেবব্রতবাবুর অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তী এবং তাঁর আত্মীয় অসিত মুখোপাধ্যায় তাঁকে জানান, হাসপাতালের ফান্ড নয়, অসিতবাবুর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই পাঁচ লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে। তিনি অস্বীকার করায় শুরু হয় হুমকি। দেবব্রতবাবু বলেন, ‘‘আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকেন ওঁরা। বাধ্য হয়ে আমি হাসপাতাল বন্ধ করে দিই।’’
আরও পডুন:আবার কংগ্রেসের হাত ধরতে চান সূর্য-বিমানরা
তিনি জানিয়েছেন, বন্ধ পড়ে থাকা হাসপাতালটি লিজে নেওয়ার পরে সেটি সারিয়ে, বিভিন্ন যন্ত্র কিনে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি। এখন বন্ধ হাসপাতাল থেকে একের পর এক যন্ত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে এলাকায় ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না। আমার বাড়ি ওখানেই। আমার বৃদ্ধ বাবা-মা সেখানে থাকেন। আমি বাড়িতে ঢুকতে পারছি না।’’ প্রিয়াঙ্কা দেবী এবং অসিতবাবুর বক্তব্য, অভিযোগ আগে প্রমাণ করে দেখান। তার পরে কথা বলবেন তাঁরা। এলাকার বিধায়ক পরশ দত্ত জানিয়েছেন, বিষয়টি তিনিও জানেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ওঁদের সাবধান করেছিলাম। কিন্তু কেউ কথা শোনেননি।’’ রাজ্য প্রশাসনকে লিখেছেন দেবব্রতবাবুও। স্থানীয় থানাও যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে লেখা হয়েছে দেবব্রতবাবুকে হাসপাতালে ঢুকতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বাধা দিচ্ছেন খোদ পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর দলবল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy