আনন্দ পটবর্ধনের ‘রাম কে নাম’
হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ পটবর্ধনের ‘রাম কে নাম’ তথ্যচিত্রটি দেখাতে গেলে তা বন্ধ করে দিয়ে কয়েক জন পড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ বার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী ওই তথ্যচিত্র দেখাতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠল। আপত্তি কেন? প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, উদ্যোগী ছাত্রছাত্রীরা ওই তথ্যচিত্র প্রদর্শনের অনুমতিই নেননি।
হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই তথ্যচিত্রকে ঘিরে যা ঘটেছে, তারই প্রতিবাদে প্রেসিডেন্সি এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ ছবিটি দেখাতে উদ্যোগী হয়েছেন। যাদবপুরে আজ, সোমবার সেটি প্রদর্শিত হওয়ার কথা। উদ্যোক্তারা জানান, এখনও পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের তরফে আপত্তি জানানো হয়নি। বস্তুত, ১৯৯২ সালের ওই তথ্যচিত্র বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে বারবার দেখানো হয়েছে কলকাতায়। প্রায় ২৭ বছর পরে সেটির প্রদর্শনী নিয়ে কেন আপত্তি প্রেসিডেন্সির, সেই প্রশ্ন উঠছে শিক্ষা, রাজনীতি-সহ সব শিবিরেই।
কাল, মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের একাংশ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু অডিটোরিয়ামে ওই তথ্যচিত্র দেখানোর ব্যবস্থা করছিল। অন্যতম উদ্যোক্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র কল্পক গুহ রবিবার জানান, ছবিটি প্রদর্শনের জন্য তাঁরা লিখিত ভাবে ডিন অব স্টুডেন্টসের দফতরে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু আবেদনপত্র গ্রহণের পরে যে-‘রিসিট’ বা প্রাপ্তি স্বীকার করে চিরকুট দেওয়া হয়, তা তাঁরা নেননি। কল্পকের বক্তব্য, ডিন অব স্টুডেন্টস অরুণ মাইতি শুক্রবার তাঁকে ফোন করে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ওই তথ্যচিত্র দেখানোর অনুমতি দেবে না। কল্পকের বক্তব্য, আবেদন করার পরে অনেক অনুষ্ঠানই করা হয় ওই প্রেক্ষাগৃহে। তাঁরা ভাবতে পারেননি, বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ তথ্যচিত্রটি দেখাতে দেবেন না। বক্তব্য জানতে এ দিন যোগাযোগ করা হলে প্রেসিডেন্সির উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া ফোন ধরেননি।
কল্পক বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী এই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবির প্রর্দশনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ সাম্প্রদায়িক শক্তিরই হাত শক্ত করলেন। প্রেসিডেন্সির অভ্যন্তরে ফাসিস্ত শক্তির উত্থানের আভাস পাচ্ছি আমরা।’’
ডিন অব স্টুডেন্টস অরুণবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘ওরা প্রদর্শনের অনুমতি নেয়নি। সোমবার অফিসে গিয়ে বিষয়টি আবার খতিয়ে দেখব।’’ অনুমতির জন্য তাঁরা যে আবেদন করেছেন, কল্পক অবশ্য তা বারবার জানিয়েছেন। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের পক্ষে রঞ্জিত শূর বলেন, ‘‘ওই ছবির প্রদর্শন বন্ধ করার নির্দেশ প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপরে চরম আঘাত। এই সিদ্ধান্ত সাম্প্রদায়িক শক্তিকে শক্তিশালী করবে। ছবিটি দেখাতে না-দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy