প্রতীকী ছবি।
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে মাঠে ময়দানের পাশাপাশি জোর লড়াই হবে সমাজমাধ্যমেও। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী। তাই গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে নেট জগতের সে যুদ্ধে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ায় প্রস্তুতি শুরু করে দিল রাজ্যের শাসকদল।
কিন্তু লড়াই হবে কী ভাবে! ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের তো আইটি সেলই নেই। বিজেপির সংগঠিত আইটি সেলের বিরুদ্ধে যা কিছু যা লড়াই তা সবই বিক্ষিপ্ত। কিছুটা ব্যক্তিগতও। তাই অবিলম্বে জেলায় দলের আইটি সেল গড়ার দাবি উঠল জেলা তৃণমূলের বৈঠকে। দিন দু’য়েক আগে সমাজমাধ্যমে সক্রিয় দলের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরবাহা সরেন।
কেন এতদিন পরে সক্রিয়তা? তৃণমূল সূত্রের খবর, করোনা, আমপান পরিস্থিতির মধ্যেই ভোট প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে বিজেপি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দলীয় কর্মীদের নিয়ে ভার্চুয়াল সভা করেছেন। জেলার জেলায় সে সভা শুরু হচ্ছে। এই আবহেই ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর টিমের তরফে সম্প্রতি এলাকা সমীক্ষা করে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়েছিল, বিজেপি-র সক্রিয় আইটি সেলের মোকাবিলা করার জন্য ঝাড়গ্রাম জেলায় তৃণমূলেরও উপযুক্ত আইটি সেল প্রয়োজন। সূত্রের খবর, এর পরেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় দলের যে সব কর্মী সমাজমাধ্যমে দলের আদর্শ ও নীতির পক্ষে প্রচার চালান ও বিজেপি-র পোস্টের ‘কাউন্টার’ করেন এমনই ৩৭ জনকে মঙ্গলবার বৈঠকে ডেকেছিলেন বিরবাহা। ঝাড়গ্রাম শহরের ফেডারেশন ভবনে মঙ্গলবার দুপুরে বৈঠকটি হয়। সূত্রের খবর, বিরবাহা জানতে চান, নেট দুনিয়ায় ও সমাজমাধ্যমে দলীয় প্রচারের রূপরেখা কেমন হওয়া উচিত। সূত্রের খবর, ‘দলীয় নেটিজেন’রা বিরবাহাকে জানান, বিজেপি-র সক্রিয় আইটি সেলের মোকাবিলার জন্য জেলায় তৃণমূলেরও উপযুক্ত আইটি সেল প্রয়োজন। প্রয়োজন তার কার্যালয়, ল্যাপটপ-সহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জামও।
তৃণমূল সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের বৈঠকে তাঁদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল— বিজেপি-র আইটি সেল থেকে কয়েকজন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। অথচ এক বছরেও ওই কর্মীদের সমাজমাধ্যমে উপযুক্ত ভাবে ব্যবহার করা হয়নি। ঝাড়গ্রাম শহরের ডাম্পি নন্দী, জয় মাহাতো, গ্রামীণ এলাকা নয়াগ্রামের শ্যামসুন্দর হাঁসদা, মানিকপাড়ার সিকন্দর খানের মতো তরুণ প্রজন্মের দলীয় কর্মীরা নিয়মিত ব্যক্তিগত ভাবে প্রতিদিন বিজেপি-র আইটি সেলের বিভিন্ন পোস্টের কাউন্টার করছেন। বৈঠকে দলের নেটিজেন-রা অভিযোগ করেন, দলের হয়ে কোনও পোস্ট দেওয়া হলে কিংবা বিজেপি-র পোস্টের বিরোধিতা করে গেরুয়া দেওয়ালে পাল্টা পোস্ট করা হলে তৃণমূলের অধিকাংশ নেতা-কর্মীরাই লাইক বা কমেন্ট করেন না। অথচ তখন বিজেপি-র কর্মীরা দাপিয়ে বেড়ান সমাজ মাধ্যমে। জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরবাহা সরেন বলেন, ‘‘বর্তমান প্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়াকে অস্বীকার করার উপায় নেই। সেই কারণেই সমাজমাধ্যমে সক্রিয় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে আইটি সেল গঠনের জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
তৃণমূলের একাংশ মানছেন, যুদ্ধ বড়ই অসম। ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি-র অফিসিয়্যাল আইটি সেল-এর সদর দফতর রয়েছে বিজেপি-র জেলা পার্টি অফিসেই। দলের আইটি সেলের দায়িত্বে রয়েছেন অনুপ প্রতিহার। ফেসবুকে ‘বিজেপি ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট পেজ’ আইটি সেল-এর তত্ত্বাবধানে চলছে। ট্যুইটারে-এ-ও রয়েছে জেলা বিজেপির অ্যাকাউন্ট। সেটিও ওই সেল দেখে। এ ছাড়া জেলার ১৮টি মণ্ডলের জন্য ১৮টি পেজ রয়েছে ফেসবুকে। চারটি বিধানসভার চারটি ফেসবুক পেজ আছে। ঝাড়গ্রাম শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডের আলাদা করে ফেসবুক পেজ আছে। অনুপ বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম জেলায় সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা তৃণমূলের থেকে কয়েক যোজন এগিয়ে রয়েছি।’’ জেলা বিজেপি-র সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘আমাদের কয়েকজনকে ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়েও তো তৃণমূল আইটি সেল চালু করতে পারেনি। শেষ বেলায় ওরা আর কী করবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy