১০৮টি পুরসভার ভোটের প্রার্থিতালিকা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে যে ‘বিভ্রান্তি’ দেখা দিয়েছে, তার ‘দায়’ ঝেড়ে ফেলল প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বাংলায় ১০৮টি পুরসভার ভোটের প্রার্থিতালিকা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে যে ‘বিভ্রান্তি’ দেখা দিয়েছে, তার ‘দায়’ ঝেড়ে ফেলল প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক। শনিবার সংস্থা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যে পুরভোটের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। ওই পুরভোটের জন্য প্রকাশিত কোনও প্রার্থিতালিকার সঙ্গেই তারা জড়িত নয়। তবে সংস্থার তরফে সরকারি বা আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও দাবি ওই মর্মে করা হয়নি। সংস্থার কর্ণধার প্রশান্ত তাঁর ঘনিষ্ঠমহলে এমনটা জানিয়েছেন বলেই আইপ্যাকের বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে কোন তালিকাটি চূড়ান্ত, তা নিয়ে খানিকটা হলেও সংশয় কাটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে এখনও বিভিন্ন জেলায় প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে।
১০৭টি পুরসভার (দার্জিলিং ছাড়া) নির্বাচনের জন্য তৃণমূলের প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করা হয় শুক্রবার বিকেলে। তৃণমূল নেতৃত্ব প্রায় হাজার তিন প্রার্থীর নাম সংবলিত পুস্তিকা দেখিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এই তালিকা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুমোদন করেছেন। সব জেলা সভাপতির কাছে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিজেদের জেলা থেকে তাঁরা সেগুলি জানিয়ে দেবেন।’’ তখন সেখানে ছিলেন তালিকা তৈরির কাজে মূল ভারপ্রাপ্ত দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ও মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন ফিরহাদ (ববি) হাকিম, অরূপ বিশ্বাস এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বুধবারের সাংগঠনিক নির্বাচনের পরে মমতা জাতীয় কর্মসমিতিতে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আপাতত এঁদের দায়িত্ব দিয়েছেন।
পরিস্থিতি ঘোরালো হয় তার পরেই। তৃণমূলের ‘অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ’ এবং ‘মিডিয়া গ্রুপে’ বিশদ প্রার্থিতালিকা প্রকাশিত হয়। তার পরেই রাজ্যের নানা জায়গা থেকে বিক্ষোভ, অবরোধ, প্রতিবাদের খবর আসতে থাকে। একাধিক নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ-বিধায়ক তাঁদের অসন্তোষের কথা জানাতে থাকেন দলের উপরতলায়। তখন আবার পার্থ ঘোষণা করেন, ‘‘এআইটিসি’র নেটমাধ্যমে প্রকাশিত ওই তালিকা ঠিক নয়। কারণ, সেগুলিতে নেতৃত্বের কোনও স্বাক্ষর নেই। স্বাক্ষর-সহ তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে।’’
সন্ধ্যার পরে আবার বক্সী এবং পার্থের সই করা ‘ঠিক’ তালিকা প্রকাশিত হয়। তবে তাতে কিছু রদবদলও দেখা যায়। কিন্তু আগের তালিকাটি কারা, কী ভাবে, কার সম্মতিতে প্রকাশ করেছিলেন, তা রাত স্পষ্ট হয়নি এখনও।
সূত্রের খবর, দলের ‘অফিশিয়াল’ মাধ্যমগুলি দেখভালের দায়িত্ব প্রশান্তের সংস্থা আইপ্যাকের। ফলে তাদের তরফেই নেটমাধ্যমে বিভিন্ন প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করা হয়ে থাকে। কিন্তু তা হলেও সেটি হয় দলের নামেই। ফলে ওই বিভ্রান্তির সঙ্গে দলও জড়িয়ে পড়েছে। নেটমাধ্যমে ওই তালিকা দেখে বিভিন্ন নেতা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তাঁরা শীর্ষ স্তরে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানাতেও শুরু করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে প্রশান্তের সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে যে, বাংলার পুরভোটের সঙ্গে তারা কোনও ভাবেই জড়িত নয়। নেটমাধ্যমে যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তার সঙ্গেও তাদের কোনও যোগাযোগ নেই। যেমন যোগাযোগ নেই দলের নেতারা যে তালিকা প্রকাশ করেছেন, তার সঙ্গেও।
প্রশান্ত নিজে এখন রয়েছেন গোয়ায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবারই গোয়া থেকে ফিরেছেন। রবিবার আবার যাবেন। তাঁরা আপাতত গোয়ার বিধানসভা ভোট নিয়ে ব্যস্ত। তবে পুরভোটে প্রার্থিতালিকা নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের খবর তাঁদের কানে পৌঁছয়নি, এমন নয়। যদিও ওই বিষয়ে অভিষেক এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি। তবে প্রশান্তের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে দাবি করা হয়েছে, পুরভোটের প্রার্থিতালিকার সঙ্গে আইপ্যাকের কোনও যোগ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy